ঘূর্ণিঝড়ে খাতুনগঞ্জে ক্ষতি শত কোটি টাকা
ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে চট্টগ্রামে। ব্যবসায়ীদের ধারণা, দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় শত কোটি টাকা। বন্দর নগরীর মোট ক্ষতির পরিমাণ ২০০ কোটি টাকা দাঁড়াবে বলে মনে করছে জেলা প্রশাসন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে চট্টগ্রাম উপকূলের প্রায় ৮০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যায়। এতে পার্শ্ববর্তী এলাকার পশু ও মৎস্য সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাঁধ সংলগ্ন শতাধিক বাড়ি ও নেভাল সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাশখালীতে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় জোয়ারের পানিতে ভেসে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন সাতজন। ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক আনোয়ারা, সন্দীপ, বাঁশখালী ও সীতাকুণ্ডু উপজেলায় মোট ৫০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি এবং ১০০ কোটি টাকার গবাদি পশু ও মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। সন্দীপ উপজেলার ২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ও বাঁশখালী উপজেলার প্রায় ৩০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পতেঙ্গা এলাকায় বেড়িবাঁধ সংলঙ্গ প্রায় ১০০ ঘরবাড়ি ও দোকান ঝড়ের কবলে আংশিক বা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
কর্ণফুলী নদীর পানি প্রবাহিত হয়ে দেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ এলাকা ভেসে যায়। অনেক মজুদ পণ্য নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক ক্ষতি হয়েছে। এতে রমজান মাসে দ্রব্যমূল্যের ওপর প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, খাতুনগঞ্জের আশপাশের খালগুলো ভরাট হয়ে আছে। এসব খালের সংস্কার ও প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে স্লুইচ গেইট দ্রুত নির্মাণ করতে হবে। এটি না হলে বর্ষাকালে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে পড়বে।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহাবুবুল আলম বলেন, ‘রাস্তাঘাট নষ্ট হয়েছে। খালে বর্জ্যে ভরে গেছে। এগুলো আবার ঠিক করতে হবে। বদর খালের সঙ্গের সংযোগটা আবার ড্রেজিং করতে হবে। আর নদী থেকে যেন পানি নগরীর দিকে না আসে সে ব্যবস্থা করতে হবে। স্লুইস গেটের মেরামত করতে হবে। এগুলো না করলে খাতুনগঞ্জের পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। এগুলোর সংস্কার করা না হলে সমস্যা থেকেই যাবে। আর বারবার মালামাল নষ্ট হবে। কয়েক বছর আগেও শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এবার ক্ষতির পরিমাণ কত তার হিসাব করতে পারিনি। তবে এবারো শত কোটি টাকার কাছাকাছি ক্ষতির হতে পারে। সবার ক্ষতি কত হয়েছে তার হিসাব পেলে মোট ক্ষতির হিসাব পাওয়া যাবে। কর্ণফুলী নদীর পানি প্রবাহিত হয়ে পানি অনেকক্ষণ খাতুনগঞ্জে জমে ছিল। আর প্রায়ই এটি হয়। গত বছরও কর্ণফুলীর পানি প্রবাহিত হয়ে এখানে আসে।’
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে একদিন বন্ধ থাকার পর চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে। বন্দরে পণ্য বোঝাই-খালাস কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়েছে।