সারাজীবন নারীদের উদ্বুদ্ধ করেছেন তিনি

Looks like you've blocked notifications!

সৃজনশীল নারী লেখক তৈরির নতুন পথ নির্মাণে ব্রতী এক মহীয়সীর নাম নূরজাহান বেগম। কালের সাক্ষী এই নারী ৯০ বছর পেরিয়েও ছিলেন শান্ত, স্পষ্ট, দৃঢ়। নতুন লেখক সৃষ্টি আর সৃজনশীলতায় নারীকে উৎসাহিত করাই ছিল তাঁর মূল লক্ষ্য।

সাংবাদিকতা সবচেয়ে সম্মানের পেশা এই ভাবনাটা নূরজাহানের মনে গেঁথে দিয়েছিলেন তাঁর বাবা সওগাত পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক মোহাম্মদ নাসিরুদ্দীন। সেইসাথে সাহসী কাজের জন্য লড়ে যাওয়ার ধৈর্যটাও বাবার কাছ থেকেই পেয়েছিলেন তিনি।

নূরজাহান বেগমের জন্ম ১৯২৫ সালে ৪ জুন চাঁদপুরের চালিতাতলী গ্রামে। মায়ের নাম ফাতেমা বেগম। নূরজাহান বেগম বিয়ে করেন কচিকাঁচার মেলার প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক রোকনুজ্জামান খান দাদাভাইকে। তাঁদের দুই সন্তান- ফ্লোরা নাসরীন খান ও রীনা ইয়াসমিন খান।

১৯৪৭ সালে 'বেগম পত্রিকার' ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু  করেন নূরজাহান বেগম। পঞ্চাশের দশকে কলকাতা থেকে বাংলাদেশে ফিরে  নারীদের উদ্বুদ্ধ করেন- ছবি আঁকা আর লেখালেখিতে এগিয়ে যেতে। আজীবন  নতুন লেখক সৃষ্টি, সাহিত্য ও সৃজনশীলতায় নারীকে উৎসাহিত করাই লক্ষ্য ছিল তাঁর। 

জীবদ্দশায় অনেক সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন নূরজাহান বেগম। এর মধ্যে রয়েছে ১৯৯৬ সালের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে নন্দিনী সাহিত্য ও পাঠচক্র সম্মাননা, ১৯৯৭ সালে রোকেয়া পদক, ২০০২ সালে অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার, ২০০৩ ও ২০০৫ সালে নারীপক্ষ দূর্বার নেটওয়ার্ক ও কন্যা শিশু দিবস উদযাপন কমিটির সংবর্ধনা।

এ ছাড়া ২০১০ সালে পত্রিকা  শিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক  নারী সংগঠন ইনার হুইল ডিস্ট্রিক্ট সম্মাননাসহ বাংলাদেশ মহিলা সমিতি, মহিলা পরিষদ, লেখিকা সংঘের স্বর্ণপদকও পেয়েছেন নূরজাহান বেগম।

বাংলাদেশের নারীদের উদ্দেশে নূরজাহান বেগম বলেছিলেন, ‘আজ তোমরা কেউ ঘর থেকে বের হতে পারতে না, যদি সে সময় আমরা আন্দোলন না করতাম। পত্রিকার মাধ্যমে লেখায়, ছবিতে এগিয়ে না যেতাম, তোমরা অবরুদ্ধ থাকতে। আমরা অবরোধটা ভেঙেছি। এখন তোমাদের কাজ হলো এগিয়ে যাওয়া। যে যে মাধ্যমে চলতে পারো, সেভাবে এগিয়ে যাও।’