সময় চেয়ে কামারুজ্জামান ও মুজাহিদের আবেদন
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/03/31/photo-1427808614.jpg)
মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামানকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনার আদেশের শুনানির জন্য আরো চার সপ্তাহ সময় চেয়ে আবেদন করেছেন তাঁর আইনজীবীরা। একইসঙ্গে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের আপিলের শুনানির জন্যও ছয় সপ্তাহ সময় চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার কামারুজ্জামান ও মুজাহিদের আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন দুটি করেন।
আগামীকাল বুধবার এ দুটি মামলার শুনানি প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত কার্যতালিকায় মামলাগুলো শুনানির জন্য রাখা হয়েছে। সময় চেয়ে করা আবেদন দুটিও কার্যতালিকায় এসেছে।
কামারুজ্জামানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এ দুটি মামলার জ্যৈষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন অসুস্থ থাকায় তিনি শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। তাই কামারুজ্জামানের রিভিউ ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের আপিলের শুনানির জন্য আমরা আদালতের কাছে সময় আবেদন করেছি।’
প্রধান বচিারপতি সুরন্দ্রে কুমার সিনহার নেত্বত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চে বুধবারের র্কাযতালিকায় কামারুজ্জামানের রিভিউ আবেদনটিও রাখা হয়েছে। বেঞ্চের অপর তিন বিচারপতি হলেন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী।
আপিল বিভাগের শুনানির অপেক্ষোয় থাকা জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মামলাও কার্যতালিকায় রয়েছে।
এর আগে কামারুজ্জামানের রিভিউ শুনানির সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১ এপ্রিল দিন ধার্য করেন আদালত। ২০১৩ সালের ৯ মে যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনাল কামারুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে আপিল বিভাগ গত বছরের ৩ নভেম্বর তাঁর ফাঁসি বহাল রাখেন। ১৮ ফেব্রুয়ারি ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে পৌঁছায়। ৫ মার্চ আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় কামারুজ্জামানের পক্ষে রিভিউ আবেদন করা হয়।
আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ : ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২। রায়ের বিরুদ্ধে মুজাহিদের পক্ষে আপিল আবেদন দায়ের করা হয়েছে। আপিল বিভাগে এ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। মুজাহিদের বিরুদ্ধে মোট সাতটি অভিযোগ আনা হয়েছিল। সাতটি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটিতে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। বাকি দুটি অভিযোগ থেকে মুজাহিদকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে একটি মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেপ্তার হন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদ। একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের ঘটনায় ২০১১ সালের ২১ জুলাই তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন কর্মকর্তারা। এরপর ২ আগস্ট তাঁকে ট্রাইব্যুনালে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গত বছরের ২১ জুন মুজাহিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট সাতটি অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল। মুজাহিদের বিরুদ্ধে গত বছরের ২৬ আগস্ট শাহরিয়ার কবিরের সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এরপর এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাকসহ মোট ১৭ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। অন্যদিকে মুজাহিদের পক্ষে প্রথম এবং একমাত্র সাফাই সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন তাঁর ছোট ছেলে আলী আহমেদ মাবরুর। গত ২২ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলে আসামিপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ৫ মে দিন ধার্য করে দেন ট্রাইব্যুনাল। উভয়পক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গত ৭ মে থেকে ১৬ মে পর্যন্ত মোট চার দিবসে মুজাহিদের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ।