ঈদ মৌসুমে ব্যস্ত সময় কাটছে ভৈরবের জুতার কারিগরদের

Looks like you've blocked notifications!
ভৈরবের একটি পাইকারি বাজারে বাহারি জুতার সমাহার। ছবি: এনটিভি

ঈদুল ফিতর সামনে রেখে ব্যস্ত সময় কাটছে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের জুতা তৈরির শিল্পীদের। এ অঞ্চলের ৫০ থেকে ৬০টি পাদুকাপল্লীর সাত/আট হাজার কারখানার আড়াই লাখের বেশি শ্রমিকের দিন-রাতের ব্যবধান যেন ঘুচে গেছে। তবে দ্রব্যমূল্যের চড়া বাজারদরে কাঙ্ক্ষিত মজুরি না পাওয়ায় ক্ষোভের কথা জানালেন কারিগররা।

অন্যদিকে নিম্নমানের ভারতীয় জুতার আমদানির কারণে লোকসানের কথা জানিয়ে কারখানা মালিকদের দাবি, অবিলম্বে তা বন্ধের উদ্যোগ সরকার না নিলে লোকসানের মুখে পড়বে দেশীয় এ শিল্প। অপর দিকে জুতা পরিবহনে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী ট্রেনে বিশেষ বগি বরাদ্দের দাবি জুতাশিল্প মালিক সমিতির।

ভৈরবের এ শিল্পকে রক্ষায় এবং অবাধ বাণিজ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলরুবা আহমেদ।

বছরের যেকোন সময়ের চেয়ে এখন অধিক বেশি কর্মমুখর ভৈরবের জুতা কারখানাগুলো। প্রতিটি কারখানায় বিরতিহীন চলছে নানা রং, সাইজ ও ডিজাইনের জুতা তৈরির কাজ। ডিজাইন, সেলাই, কাটিং, সোল তৈরি, পেস্টিং, রং করা, সলিউশন করা, আপার তৈরি, ফিতায় বেণি করা, বাক্স তৈরি ইত্যাদি বিভিন্ন রকম কাজের ভিন্ন ভিন্ন কারিগর যার যার কাজ নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত। এসব কারখানার একেকজন শ্রমিক সাধারণত দৈনিক ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা উপার্জন করলেও নানা উৎসবের সময় এ আয় বেড়ে যায়। তাই মৌসুমি সময়ের এতটুকু সুযোগও ছেড়ে দিতে রাজি নন তাঁরা। তবে দ্রব্যমূল্যের এ ঊর্ধ্বগতির বাজারে কাঙ্ক্ষিত মজুরি না বাড়ায় অসন্তোষ জানান কারিগররা।

এদিকে জুতা কারখানার মালিকরা জানান, নিম্নমানের ভারতীয় জুতা দেশের বিভিন্ন মোকামে অবাধে দখল করে নেওয়ায় তাঁরা উৎপাদিত জুতার কাঙ্ক্ষিত মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে তাঁরা ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তাঁদের কারখানার শ্রমিকদের সঠিক মজুরি দিতে পারেন না। তাঁরা অবিলম্বে ভারতীয় জুতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।

অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা জুতার পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, এখানকার উৎপাদিত জুতা খুবই উন্নত মানের এবং দেশব্যাপী এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

দীর্ঘ এক বছর ধরে ভৈরবের জুতাশিল্পের বাজার মন্দা যাচ্ছে বলে জানান ভৈরব জুতাশিল্প কারখানা মালিক সমিতির সভাপতি আবদুল লতিফ। এখানকার হাতে তৈরি জুতা অত্যন্ত মজবুত এবং উন্নত হওয়া সত্ত্বেও ভারতীয় প্রযুক্তিনির্ভর নিম্নমানের জুতার কাছে বাজার হারাচ্ছেন তাঁরা। তিনি ভারতীয় জুতার প্রবেশ বন্ধ অথবা বেশি করে করারোপের দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীতে ভৈরবের জুতার ব্যাপক চাহিদার কথা উল্লেখ করে তিনি চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী ট্রেনে জুতাশিল্প পরিবহনে বগি বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন।