দুর্ভোগে দুই লাখ মানুষ, ত্রাণ-সহায়তাও অপ্রতুল
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদ ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ব্রহ্মপুত্রের পানি এবং ধরলার পানি বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সেই সঙ্গে বেড়েছে দুধকুমার, তিস্তাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানিও। পানি বৃদ্ধির ফলে কুড়িগ্রামে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী, উলিপুর, রৌমারী, রাজীবপুর, নাগেশ্বরী ও ফুলবাড়ী উপজেলার ৪০টি ইউনিয়নের প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ও ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ছয় দিন ধরে পানিবন্দি থাকা এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট। রাস্তাঘাট তলিয়ে থাকায় ভেঙে পড়েছে যোগাযোগব্যবস্থা। শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। বন্যাদুর্গত এলাকার অনেক পরিবার গবাদিপশু নিয়ে উঁচু বাঁধ ও পাকা সড়কে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। এসব এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে পানিবাহিত নানা রোগ।
উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের জব্বার আলী জানান, গত বন্যায় ভাঙনের ফলে বাড়ি সরিয়ে নতুন চরে এনেছেন তিনি। কিন্তু এবারের বন্যায় এখানেও আর থাকা যাচ্ছে না। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো ত্রাণ-সহায়তা পাননি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
উলিপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. হায়দার আলী বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে জানান, উপজেলায় সরেজমিনে পরিদর্শনে শেষে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করবেন তিনি।
এদিকে, ফুলবাড়ী ও উলিপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আকতার হোসেন আজাদ জানান, বন্যার্তদের জন্য পাঁচ লাখ টাকার শুকনো খাবার বিতরণ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া আরো তিন লাখ ৭৫ হাজার টাকা ও ৯৮ টন চাল বিতরণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নতুন করে আরো দুইশ টন চাল ও দুই লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে, যা পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হবে।