বাজারের রাস্তায় ধান লাগিয়ে প্রতিবাদ
চারপাশে দোকানসহ বিভিন্ন ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সবাই ব্যস্ত যার যার কাজে। তবে বাজারের মধ্যে খোলা জায়গার দিকে তাকালে বেশ অবাক হতে হবে। কারণ, সেখানে বেড়ে উঠছে ধানগাছ।
তবে কি বাজারের মাঝে ধানচাষ করছেন মাদারীপুরের মস্তফাপুর বাজারের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা? না, বাজারে চলাচলের মূল সড়ক এবং বাজারের মধ্যে কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। তাই সামান্য বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনকে জানানোর পরও আবর্জনা নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা তৈরি বা সড়ক সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাই নিজেদের প্রতিবাদ হিসেবে বাজারের সড়কে ধানগাছ লাগিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, মস্তফাপুর বাজারটি পৌরসভার বাইরে। সেখানে নেই কোনো নিষ্কাশন ব্যবস্থা। কোনো ড্রেন না থাকায় পানি, ময়লা-আবর্জনা নিষ্কাশন না হয়ে বাজারের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই মস্তফাপুর বাজারের সড়কগুলো আধহাত পানির নিচে তলিয়ে যায়। এ ছাড়া আশপাশের কয়েকটি ডোবায় বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ, বাড়ি নির্মাণ ও রাস্তার পাশে ময়লা ফেলার কারণেও পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে বাজার করতে আসা সাধারণ মানুষসহ চরম দুর্ভোগে পড়ছেন দোকানদাররা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মস্তফাপুর বাজারের স্কুল মোড় থেকে কামারপট্টি হয়ে পানপট্টি পর্যন্ত এলাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই হাঁটুপানি জমে যায়। স্কুলপট্টি থেকে গার্মেন্টপট্টি পর্যন্ত পানি জমে না থাকলেও এই রাস্তাটুকু খানাখন্দে ভরা। গার্মেন্টপট্টির পর থেকে বাজারের অল্প কিছু রাস্তা ভালো হলেও বাবুল ঘোষের দোকানের সামনে থেকে শুরু করে কাঁচাবাজারের আড়তগুলোর সামনের রাস্তা, খুচরা বিক্রেতাদের পসরার সামনের রাস্তায় অনেক বছর কোনো সংস্কার না হওয়ায় বিরাট সব গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই সেখানে জমে যায় কাদাপানি।
বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০০ সালের আগে একটি ছোট ড্রেন ব্যবস্থা ছিল। ধীরে ধীরে তা বন্ধ হয়ে গেছে। তবে এর পর আর কোনো ড্রেনের ব্যবস্থা করা হয়নি। বাজারের রাস্তাঘাটের যে অবস্থা, তাতে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে লোকসানের মুখে পড়বেন ব্যবসায়ীরা। কেননা আসা-যাওয়া এবং মালামাল পরিবহনের সমস্যার কারণে বাজার এলাকা ত্যাগ করে অন্য কোথাও সরে যাওয়ার কথা ভাবছেন অনেক ব্যবসায়ী।
বেহাল সড়কের কারণে অনেক ক্রেতাও এই বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। বাজারে দোকান নিতে হলে বাজার কমিটিকে প্রায় দুই থেকে তিন লাখ টাকা অগ্রিম দিতে হয়। অথচ বাজারের দোকানদাররা তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা পান না। এসব কারণে উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
বাজারের ব্যবসায়ী পবিত্র, মিঠু, দেলোয়ার, সরোয়ার, মেহেদীসহ বেশ কয়েকজন জানান, কাগজে-কলমে তাঁরা মস্তফাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। অথচ রাস্তাঘাট বা চলাফেরার ক্ষেত্রে কোনো সুবিধাই পাওয়া যায় না। সরকারি নিয়মনীতি অনুসারে নিয়মিত ট্রেড লাইসেন্সের ফি পরিশোধ করেন তাঁরা। তবু ন্যূনতম সুবিধাটুকু পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শফিউর রহমানের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, তাঁরা পরিকল্পিত নগরায়ণের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। মস্তফাপুর বাজারের ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান ও বাজার কমিটির সভাপতি সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।