গুলশান হামলার দায়িত্বে ছিলেন মারজান
রাজধানীর গুলশানে স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার দায়িত্বে ছিলেন মারজান নামের এক ব্যক্তি। এ হামলায় হাসনাত করিম, মেজর জিয়া ও তাহমিদের সঙ্গে তিনি কাজ করেছেন।
আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, হামলার দিন যে পাঁচ জঙ্গি কমান্ডো অভিযানে মারা যায়, তারা বসুন্ধরার বাসা থেকেই এসেছিল। তারা ভিন্ন ভিন্ন পথে হেঁটে একে একে আর্টিজান হোটেলে প্রবেশ করে। তাদের সহযোগিতা করতে আরো দুজন সেখানে প্রবেশ করে। তাঁরা হলেন হাসনাত করিম ও তাহমিদ।
এ হামলার মূল হোতা তামিম ও জিয়া। তাঁরা বাইরে থেকে পুরো হামলার নেতৃত্ব দেন। আর তামিম ও জিয়ার সঙ্গে সমন্বয় করে ওই দিনের হামলার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মারজান।
মনিরুল বলেন, গুলশান হামলার বিভিন্ন সাক্ষী ও আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে মারজানের ব্যাপারে তথ্য পাওয়া যায়। সেই তথ্য অধিকতর যাচাই-বাছাই করে মারজান যে ওই হামলায় বাইরে ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করেছেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়।
মারজানকে ধরতে এরই মধ্যে দেশের সব গোয়েন্দা সংস্থার কাছে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। তারা কিছু ছবি দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। সেই ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হবে।
মারজান কোথায় আছে—জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, মারজান ঢাকাতেই আছেন। তাঁকে ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, মারজান হামলার সময় ওই হোটেলের ভেতরে না থাকলেও বাইরে থেকে ফোন ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করেছেন। তা ছাড়া যে আইডিতে জঙ্গিরা লাশের ছবি পাঠিয়েছে, সেই আইডির পাসওয়ার্ডও মারজানের কাছে ছিল। ওই পাসওয়ার্ড দেখেই মারজান বিভিন্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন।
পুলিশ ধারণা করছে, বাংলাদেশের দুটি পত্রিকা সেই ছবি প্রকাশ করেছিল। কারণ, দুটি পত্রিকার ছবি ছিল একেবারই স্পষ্ট। ওই পত্রিকা দুটির সম্পাদকদের তদন্তকারী সংস্থাকে সহযোগিতা করার জন্য এরই মধ্যে আদালত থেকে গত বৃহস্পতিবার নির্দেশনাও জারি করা হয়েছে।
ছবির ব্যাপারে মনিরুল বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ওই ছবি দুটি ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হবে। এরপর ল্যাব টেস্টে যদি এমনটা প্রমাণিত হয় যে ছবি দুটি মারজানদের দেওয়া, তবে আদালতে আইসিটি আইনে মামলার জন্য আবেদন করা হবে।
মেজর জিয়া ও তামিমের ব্যাপারে জানতে চাইলে সিটিটিসির প্রধান বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ধারণা, তাঁরা দুজন দেশেই আছেন। তাঁদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। এ ছাড়া কেউ ধরিয়ে দিতে পারলে ২০ লাখ টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হবে।