গ্রাহকের ১০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও আরডিপি

Looks like you've blocked notifications!

পটুয়াখালীতে গ্রাহকদের ১০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি সঞ্চয়ী হিসাব ও ঋণদান সংস্থার বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে রুরাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (আরডিপি) নামে ওই সংস্থার দুজন ব্যবস্থাপকসহ তিনজনকে গত সোমবার আটক করেছে পুলিশ। সংস্থার পরিচালনা পর্ষদের আট সদস্য এখনো পলাতক।

২০১২ সালের জুন মাসে পটুয়াখালী শহরের সদর রোডে ইসলামিক ফাউন্ডেশন অফিসের কাছে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ভবনের তৃতীয় তলায় রুরাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম আরডিপি (পল্লী উন্নয়ন কর্মসূচি) নামে সংস্থাটির কার্যক্রম শুরু হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে এ সংস্থার কার্যক্রম উদ্বোধন করেন পৌরসভার মেয়র মো. শফিকুল ইসলাম। শুরুতেই বিনা সুদে মোটা অঙ্কের ঋণ দিয়ে মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহক সৃষ্টিতে আকৃষ্ট করে ওই সংস্থা। পর্যায়ক্রমে সঞ্চয়ী হিসাব খোলা, জমা টাকার দ্বিগুণ ব্যবসাসহ নানাভাবে কৌশলে ব্যাংকিং পদ্ধতি চালু করে আরডিপি। 

গত সোমবার সকাল থেকে কয়েকজন গ্রাহক সংস্থার কার্যালয়ে গিয়ে দেখেন দরজা তালাবদ্ধ। বুঝতে পেরে তাঁরা তখনই হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়ে শহরের সর্বত্র। এ ব্যাপারে রাতেই অভিযানে নামে পুলিশ। প্রথমে আটক করা হয় গলাচিপা উপজেলা আরডিপির ব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলামকে। জাহিদুলের স্বীকারোক্তিতে ওই দিনই গভীর রাতে সদর উপজেলার বদরপুর গ্রামের বাড়ি থেকে জেলা কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক রাশেদুল ইসলামকে আটক করা হয়। এ ছাড়া শহর থেকে অফিস সহকারী জুয়েলকে আটক করা হয়।

তবে শতাধিক ক্ষুব্ধ গ্রাহক জমা টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় মঙ্গলবারও ওই কার্যালয়ের সামনে ভিড় করেন।

ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক সামিয়া রহমান, জাকির হোসেন ও সোহরাব মিয়া এনটিভি অনলাইনকে জানান, প্রশাসনের নাকের ডগায় সরকারি অনুমোদন ছাড়া অবৈধ এবং হয়রানিমূলক এসব কার্যক্রম হয়েছে। একাধিকবার অভিযোগ করলেও পটুয়াখালী প্রশাসনসহ সব মহল বরাবরই চুপ ছিল।

সংস্থার কার্যালয়ের ভবন মালিক শবির গাজী বলেন, ‘ভাড়াটিয়াকে কার্যালয়ের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়েছে। পালিয়ে গেলে আমার কী করার আছে।’ 

গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিশির কুমার পাল জানান, গলাচিপায় কম হলেও ওই সংস্থা ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার পায়তারা চালাচ্ছিল। পুলিশ সুপারের নির্দেশে ব্যবস্থাপক জাহিদকে ধরা হয়েছে।’

পটুয়াখালী সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক এনটিভি অনলাইনকে জানান, আরডিপির পরিচালনা পর্ষদে আটজন রয়েছেন। এঁরা সবাই পলাতক। আটক রাশেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁদের নাম-ঠিকানা নিশ্চিত করা হচ্ছে। 

ওসি জানান, মামলা হলে তো কোম্পানি টাকা না দিয়ে বেঁচে যাবে। পটুয়াখালী আরডিপির গ্রাহকদের প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের ফন্দি চূড়ান্ত করা হয়েছিল। এখন শাখাটি চালু করে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়ার প্রচেষ্টা চালানো হবে। 

পুলিশ সুপার সৈয়দ মোসফিকুর রহমান দাবি করেন, সংস্থাটি জামায়াত-শিবির দ্বারা পরিচালিত। তিনি বলেন, সংস্থার প্রধান ছদ্মনাম ব্যবহার করে কখনো জব্বার আবার কখনো নিজেকে জলিল নামে পরিচয় দিয়ে থাকেন। তাঁর বাড়ি নারায়ণগঞ্জে। তিনি জামায়াতের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত। আটক ব্যক্তিদের গলাচিপা ও পটুয়াখালী সদর থানায় রেখে পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।