বিএমএ নেতার বিরুদ্ধে এবার ট্রাইব্যুনালে মামলা কলেজছাত্রীর
লক্ষ্মীপুরে কলেজছাত্রী ফারহানা আক্তারের (৩২) ওপর হামলার ঘটনায় এবার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করা হয়েছে।
গত রোববার সদর থানায় দায়ের করা মামলায় অসন্তোষ প্রকাশ করে সোমবার দুপুরে ফারহানা বাদী হয়ে ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। এতে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) জেলা সভাপতি ও জেলা পরিবার-পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আশফাকুর রহমান মামুনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরো তিনজনকে আসামি করা হয়।
নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) ড. এ কে এম আবুল কাশেম মামলাটি আমলে নিয়ে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. মোশারফ হোসেনকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলার বাদী ফারহানা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার দেওয়া এজাহার না নিয়ে থানার পুলিশ নিজেদের মনগড়া এজাহার করতে বাধ্য করেন। দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আমাকে থানায় বসিয়ে রাখা হয়। পুলিশের প্রতি আস্থা রাখতে না পেরে অবশেষে আদালতের শরণাপন্ন হলাম।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী জহুর আহমদ চৌধুরী জানান, ফারহানা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ফারহানা লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের শাখারীপাড়া এলাকায় সবিতা রাণী নামের এক নারীর বাসায় ভাড়ায় থাকেন। তিনি লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিগ্রি পরীক্ষা দিচ্ছেন। এর আগে তিনি লক্ষ্মীপুরে বেসরকারি সংস্থা ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’-এর মা-মনি প্রকল্পের কর্মী ছিলেন।
পরীক্ষা শেষে গত শনিবার বিকেলে সবিতার বাসা থেকে পাবনা যাওয়ার উদ্দেশে বের হন ফারহানা। অপেক্ষা করেও বাস কাউন্টারে টিকেট না পেয়ে রাতে আবার ভাড়া বাসায় ফিরছিলেন তিনি। পথে তিনি দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন।
ফারহানাকে কুপিয়ে আহত করা হয়। এ সময় তাঁর চিৎকারে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে আহত অবস্থায় তাঁকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ফারহানা অভিযোগ করেন, লক্ষ্মীপুরে কর্মরত অবস্থায় ডা. আশফাকুর রহমান মামুনের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর ৩০ লাখ টাকা দেনমোহরে সিলেট এলাকার ‘সুরমা ভ্যালি’ নামের রেস্ট হাউজে মামুনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাঁর স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেওয়া নিয়ে মামুনের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়। তার জের ধরেই তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়।
যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ডা. আশফাকুর রহমান মামুন।