গ্রামীণফোন-বাংলালিংককে দিতে হবে ৬০ লাখ টাকা
জাতীয় সংগীতকে (আমার সোনার বাংলা) বাণিজ্যিকভাবে মোবাইল ফোনের রিংটোন হিসেবে ব্যবহার না করতে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে গ্রামীণফোন ও বাংলালিংকের দায়ের করা আপিলের শুনানি শেষে আজ সোমবার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এ রায় দেন। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা ও বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
সর্বোচ্চ আদালত একই সঙ্গে বাংলালিংক ও গ্রামীণফোনকে পৃথকভাবে দুটি হাসপাতালে দাতব্য হিসেবে ৩০ লাখ করে টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে রিটকারীর আইনজীবী মাসুদ আহমেদ সাঈদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ১৯৭৮ সালের জাতীয় সংগীত রুলস ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল এনথেম অ্যাক্ট (সংশোধিত) ২০১০ অনুযায়ী, জাতীয় সংগীতকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা যাবে না। কেননা জাতীয় সংগীত একটি গাম্ভীর্যপূর্ণ বিষয়। এটি কোনো ব্যক্তির ব্যক্তিগত বাণিজ্যিক বিষয় নয়। এটি দেশের সম্পদ। তাই এটিকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করাটা অবৈধ।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, জাতীয় সংগীতকে রিংটোন হিসেবে ব্যবহার না করতে ২০০৬ সালের ১১ ডিসেম্বর হাইকোর্টের আইনজীবী কালীপদ মৃধা হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। আদালত প্রাথমিক শুনানি শেষে রিংটোন হিসেবে জাতীয় সংগীত ব্যবহার করাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না-এ মর্মে রুলও জারি করেন। রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৫ আগস্ট হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে জাতীয় সংগীতকে রিংটোন হিসেবে ব্যবহার করাকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে গ্রামীণফোন, রবি (একটেল), বাংলালিংক কোম্পানির প্রত্যেককে ৫০ লাখ টাকা করে জরিমানা করেন। এ টাকাগুলো গ্রামীণফোনকে লিভার ইনস্টিটিউট হাসপাতাল, বাংলালিংককে জাতীয় কিডনি হাসপাতাল এবং রবিকে ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটে দাতব্য অর্থ হিসেবে দিতে বলেন।
এ রায়ের বিরুদ্ধে গ্রামীণফোন ও বাংলালিংক আপিল দায়ের করে। রবি কোনো আপিল করেনি, তারা হাইকোর্টের রায় মেনে টাকা পরিশোধ করেছে বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবি। আদালত আপিলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ এ রায় দেন।
রিটকারীর পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন মাসুদ আহমেদ সাঈদ। সরকারপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।