খুলনায় ম্যাক্সিমের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ
খুলনায় গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রায় ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ম্যাক্সিম মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে একটি বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে। নগরীর খালিশপুর এলাকার কার্যালয় বন্ধ করে আত্মগোপন করেছেন সংস্থাটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এর ফলে শতাধিক গ্রাহক বিপাকে পড়েছেন।
আজ বুধবার বেলা ১২টায় খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন শেখ আসমত আলী। তিনি এ সংস্থার কারণে আর্থিক প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে জানান।
লিখিত বক্তব্যে শেখ আসমত জানান, ম্যাক্সিম সোসাইটি পরিচালনা করতেন নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার বয়রা ইসলামিয়া কলেজ রোডের মো. মিজানুর রহমান। এক লাখ টাকায় মাসে দুই হাজার ২০০ টাকা লভ্যাংশ দেওয়ার চুক্তিতে তিনি ২০১২ সালের ২৫ জুলাই ওই সংস্থায় এক লাখ টাকা জমা দেন। পরে তিনি আরো দুই লাখ টাকা জমা দেন। একইভাবে শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে সংস্থার লোকজন প্রায় ৪০ লাখ টাকা জমা নেন।
সংবাদ সম্মেলনে শেখ আসমত আলী ও আয়েশা বেগমসহ উপস্থিত কয়েকজন জানান, রিকশাচালক থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ কেউ প্রতিদিন ১০-২০ টাকা আবার কেউ এককালীন ৫০ হাজার কিংবা তারও বেশি অঙ্কের টাকা জমা দেন। কিন্তু লভ্যাংশ তো দূরের কথা, গ্রাহকরা মূল টাকাই ফেরত পাচ্ছেন না। সংস্থাটির জমা বইতে সরকার অনুমোদিত লেখা থাকলেও কোনো রেজিস্ট্রেশন নম্বর নেই। এ প্রসঙ্গে গ্রাহকরা জানান, সরকার অনুমোদিত লেখা দেখে তাঁরা (গ্রাহক) আশ্বস্ত হয়েছিলেন।
শেখ আসমত আলী জানান, মিজানুর রহমানের কাছে লভ্যাংশের টাকা চাইলে তিনি লভ্যাংশ না দিয়ে সময়ক্ষেপণ করেন। মূল টাকা ফেরত চাইলে মিজানুর টালবাহানা শুরু করেন। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্নভাবে সালিস-বিচার করলে মিজানুরের বাবা মো. আজিজুর রহমান মূল তিন লাখ টাকা ফেরত দিতে চান এবং চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন।
এরপরও টাকা ফেরত পাননি শেখ আসমত। তিনি গত বছরের ১৪ অক্টোবর থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগ দেওয়ার পর পুলিশের কাছেও আজিজুর রহমান ও তাঁর ছেলে মিজানুর টাকা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন। অথচ তারপরও তাঁরা টাকা দেয়নি।
শেখ আসমত জানান, থানায় অভিযোগ করার কারণে গত বছর ২১ অক্টোবর আজিজুর রহমানের ছেলে রিয়াজ ও তাঁর সহযোগীরা সোনাডাঙ্গা এলাকায় তাঁকে (শেখ আসমত) মারধর করে। এ ঘটনায় তিনি পরদিন থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
গত ৪ মে শেখ আসমত আলী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। এরপর আবারও থানায় এসে আজিজুর রহমান টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে তা পরিশোধ করেননি। আজিজুর রহমান ও তাঁর লোকজন শেখ আসমতকে হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে ম্যাক্সিম মাল্টিপারপাস কো অপারেটিভ সোসাইটির কোনো কর্মকর্তার সঙ্গেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে খুলনা সদর থানার সেকেন্ড অফিসার (বর্তমানে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) মোস্তাক আহমেদ জানান, ‘এ ব্যাপারে কোনো মামলা নেই। মামলা নেওয়া হবে।’