নারায়ণগঞ্জে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার, শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় যৌতুক না পেয়ে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ডালিয়া (২৪) নামের ওই গৃহবধূর লাশ তাঁর শ্বশুড়বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানাসহ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ডালিয়ার শ্বশুরবাড়ির সবাই পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ডালিয়ার পরিবারের অভিযোগ, মৃত্যুর দেড় ঘণ্টা আগেও ছোট ভাইকে মোবাইলে ফোন করে নিজেকে এবং তাঁর শিশু সন্তানকে বাঁচাতে আকুতি জানান ডালিয়া। পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর ডালিয়ার লাশ ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে ও দরজা ভেঙে তাঁকে বের করার নাটক সাজিয়েছে তাঁর শ্বশুড়বাড়ির লোকরা।
নিহত ডালিয়ার বাবা মুসলিম মিয়া বলেন, প্রায় চার বছর আগে ডালিয়ার সঙ্গে সিঙ্গাপুরপ্রবাসী ফতুল্লা তক্কার মাঠ এলাকার বাশারের সঙ্গে বিয়ে হয়। তাঁদের সংসারে আড়াই বছর বয়সী এক ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের আগে যৌতুকের বিষয়টি নিয়ে বাশারের পরিবার কথা না বললেও বিয়ের ছয় মাস পর থেকেই বাশার ও তাঁর পরিবার ডালিয়ার কাছে যৌতুক দাবি করে আসছিলেন। বিষয়টি নিয়ে ডালিয়ার ভাশুর শফিক ও ননদ শিউলি প্রায় সময়ই ডালিয়াকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতো।
ডালিয়ার বাবা আরো বলেন, কয়েক মাস আগে বাশার সিঙ্গাপুর থেকে দেশে এসে যৌতুকের দাবিতে ডালিয়াকে মারধরও করেন। ওই সময় বাশারকে টাকাও দেওয়া হয় ডালিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে।
মুসলিম মিয়া বলেন, “আজ ডালিয়া তাঁর ছোট ভাইকে মোবাইলে ফোন করে বলে, ‘আমাকে বাঁচাও, ওরা আমাকে ও হৃদয়কে মেরে ফেলবে। এ ঘটনার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ডালিয়া অসুস্থ হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে সিঙ্গাপুর থেকে আমায় ফোনে জানায় বাশার।’ খবর পেয়ে তিনি মেয়ের শ্বশুড়বাড়িতে গেলে তাঁর লাশ খাটে পড়ে থাকতেন দেখেন।’
ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান জানান, ডালিয়ার মৃতদেহ ঘরের খাটে পড়ে থাকা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ঘরের দরজা কাটা ও ফ্যানের সঙ্গে রশি ঝুলানো দেখা গেছে। কী কারণে ডালিয়ার মৃত্যু হয়েছে বা কীভাবে ডালিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল তা জানা যায়নি।
এ ঘটনার পর থেকে ডালিয়ার ভাসুর শফিকসহ পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছে।