তিন একর জমির তিলগাছ উপড়ে নষ্ট

Looks like you've blocked notifications!
নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলায় রাতের আঁধারে মুক্তিযোদ্ধার তিন একর জমির তিল উপড়ে ও কেটে নষ্ট করে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। ছবি : এনটিভি

নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলায় রাতের আঁধারে একজন মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের তিন একর জমির তিল উপড়ে ও কেটে নষ্ট করে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ মে) দিনগত রাতের আঁধারে মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাসারের এই তিলের চারা কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা।এতে করে সাড়ে তিন লাখ থেকে চার লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি পরিবারটির। 

এলাকাবাসী ও মুক্তিযোদ্ধার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মেন্দিপুর ইউনিয়নের মেন্দিপুর পূর্বপাড়া গ্রামের ক্তিযোদ্ধা আবুল বাসার চৌধুরী ঢাকায় বসবাস করেন। গ্রামের বাড়িতে তাঁর বৃদ্ধ চাচা রুহুল আমীন চৌধুরী ও পরিবারের কয়েক সদস্য থাকেন। গ্রামের বৈশাখীকান্দা হাওরে তাঁদের প্রায় সাড়ে তিন একর জমি রয়েছে। ওই জমি নিয়ে গ্রামের কিছু লোকের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। পানি সেচ না দেওয়ায় ওই জমিতে ধান চাষ করতে পারেনি পরিবারটি। তাই বিষয়টি গত ১ মার্চ নেত্রকোনা জেলা প্রশাসককে জানান তিনি। পরে জেলা প্রশাসকের সহায়তায় ওই জমিতে খালিয়াজুরী থানা পুলিশ ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের লোকজনের উপস্থিতিতে তিল চাষ করা হয়। 

মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাসার চৌধুরীর মেয়ে পান্না চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ এক ইঞ্চি জমিও পতিত থাকবে না। কিন্তু আমাদের বেলায় এই নির্দেশনা রাখা যায়নি। রাতের আঁধারে আমাদের গ্রামের কিছু লোক তিল গাছের চারা কেটে ফেলেছে।’ 

বৃদ্ধ রুহুল আমীন চৌধুরী বলেন, ‘গ্রামের রিপন মিয়া, সেকুল মিয়া, নজরুল ইসলাম ও তাদের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধিতা করছে। আমাদের জমি ওরা দখল করার চেষ্টা করছে। আমার পরিবারের লোকজন প্রায় সবাই ঢাকা ও অন্যান্য স্থানে থাকে। এই সুযোগে এরা আমাদের নানাভাবে অত্যাচার করছে। পানি না দেওযায় ধান চাষ করতে পারিনি। জেলা প্রশাসককে বিষয়টি জানালে তাঁর সহযোগিতায় তিল চাষ করেছিলাম। রাতের বেলায় এরা আমাদের সম্পূর্ণ তিলগাছ কেটে ও উপড়ে নষ্ট করে ফেলেছে।’

মেন্দিপুর পূর্বপাড়া গ্রামের অভিযুক্ত রিপন মিয়া বলেন, ‘গ্রামের কান্দায় এই জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের লোকজনের সঙ্গে ঝামেলা চলছে। আমাদের সঙ্গে আগে বিরোধ ছিল। এখন আর আমাদের সঙ্গে তাদের কোনো বিরোধ নেন। শুনেছি এই জমিতে লাগানো তিলগাছ কেটে ফেলা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে আমরা কিছু জানি না। তারা নিজেরা কেটে অন্যের উপর দোষ চাপাতেও পারে।’

মেন্দিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু হেকিম পাখি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাসার চৌধুরীর সঙ্গে গ্রামের কিছু লোকের দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছে। রাতের আঁধারে তিলগাছ কেটে ফেলার বিষয়টি শুনেছি। কে বা কারা কেটেছে বলতে পারব না। এ ব্যাপারে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’ 

খালিয়াজুরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল বাশার বলেন, ‘মেন্দিপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাসার চৌধুরীর জমিতে ফসল আবাদে বাধা দেওয়ার অভিযোগে কয়েক মাস আগে থানায় জিডি হয়েছিল। তিলগাছ কেটে ফেলার ব্যাপারে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’