ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা বিভাগে পরীক্ষা ও প্রেজেন্টেশন চলার সময় প্রত্যেক ছাত্রীর কানসহ মুখমণ্ডল খোলা রাখতে হবে বলে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আজ সোমবার (২৯ মে) ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. নুরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। সেই সঙ্গে আগামী দুই মাসের মধ্যে হাইকোর্টকে রিট নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়।

এ সময় আপিল বিভাগ বলেন, ‘শিক্ষকরা পিতার সমতুল্য। সেজন্য পরিচয় শনাক্তকরণের জন্য তারা ছাত্রীদের মুখমণ্ডল দেখতে পারেন।’

এর আগে ঢাবির বাংলা বিভাগে পরীক্ষা ও প্রেজেন্টেশন চলার সময় প্রত্যেক ছাত্রীর কানসহ মুখমণ্ডল খোলা রাখার বিজ্ঞপ্তির বৈধতা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের একটি আইনি নোটিশ দেওয়া হয়। ওই নোটিশের জবাব না পেয়ে ঢাবি কর্তৃপক্ষের বিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। ভুক্তভোগী তিন শিক্ষার্থীর পক্ষে আইনজীবী মো. ফয়জুল্লাহ ফয়েজ এ রিট দায়ের করেন। রিট আবেদনে ঢাবির ভিসি, বাংলা বিভাগের প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

ওই রিটের শুনানি নিয়ে গত ২৮ মার্চ ঢাবির বাংলা বিভাগে পরীক্ষা ও প্রেজেন্টেশন চলার সময় প্রত্যেক ছাত্রীর কানসহ মুখমণ্ডল খোলা রাখার নোটিশের কার্যকারিতা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এর ফলে ঢাবিতে ছাত্রীদের কান-মুখণ্ডল খোলা রাখতে বাধ্য করা যাবে না বলে জানান আইনজীবীরা। একইসঙ্গে প্রত্যেক ছাত্রীর কানসহ মুখমণ্ডল খোলা রাখার নোটিশটি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. ফয়জুল্লাহ ফয়েজ। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

গত বছরের ১১ ডিসেম্বর বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. আজিজুল হকের সই করা নোটিশে বলা হয়, বাংলা বিভাগের সব শিক্ষার্থীকে জানানো যাচ্ছে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বাংলা বিভাগের একাডেমিক কমিটি সর্বসম্মতভাবে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী বাংলা বিভাগের প্রতি ব্যাচের সংযোগ ক্লাস (টিউটোরিয়াল প্রেজেন্টেশন), মিডটার্ম পরীক্ষা, চূড়ান্ত পরীক্ষা ও মৌখিক পরীক্ষার সময় পরীক্ষার্থীর পরিচয় শনাক্তের জন্য কানসহ মুখমণ্ডল পরীক্ষা চলাকালীন সময় দৃশ্যমান রাখতে হবে। এ সিদ্ধান্ত প্রতিটি ক্লাসে শিক্ষকরা ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের জানিছেন। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কোনো কোনো শিক্ষার্থী এই সিদ্ধান্ত পালনে শৈথিল্য দেখাচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ ডিসেম্বের অনুষ্ঠিত বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভায় সর্বসম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়, ১৮ সেপ্টেম্বরে নেওয়া সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে যারা পালন করবে না তাদের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’