জামিনে থাকার পরও শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার, ওসিকে হাইকোর্টে তলব

Looks like you've blocked notifications!
হাইকোর্ট। এনটিভির ফাইল ছবি

উচ্চ আদালত থেকে জামিনে থাকার পরও কলেজ শিক্ষার্থী মো. আশ্রাফুল হাওলাদারকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মিজানুর রহমানকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৮ জুন স্বশরীরে আদালতে হাজির হয়ে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে।

একইসঙ্গে জামিনে থাকা সত্ত্বেও উদ্দেশ্যমূলক গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশের ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।

গতকাল সোমবার (২৯ মে) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট স্ব-প্রণোদিত হয়ে লিখিতভাবে এই আদেশ দিয়েছেন।

আদালত আদেশে বলেছেন, মো. আশ্রাফুল হাওলাদারকে গ্রেপ্তারে পুলিশ সদস্যের আচরণ বা প্রক্রিয়া আইনের পরিপন্থী। একইসঙ্গে তা আমাদের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনারও পরিপন্থী। এটা আইনের মিমাংসিত প্রস্তাব যে, প্রাসঙ্গিক আইন অনুসরণ না করে নাগরিক অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করার আগে প্রথমে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে আইনি বিষয় নিয়ে ভাবতে হয়। এখানে আসামি ফৌজদারি বিভিন্ন মামলায় উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিনে রয়েছেন। আইনজীবী উচ্চ আদালতের জামিনের বিষয়ে আসামিকে সার্টিফিকেট প্রদান করেছেন। ওই মামলায় মনে হচ্ছে, এএসআই মিজানুর রহমান সর্বোচ্চ আদালতের গাইডলাইন ও আইনকে   অবহেলা করেছেন। ফলে ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার কার্যকারিতা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। আদালত মনে করে, পটুয়াখালী সদর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান ও এএসআই মিজানুর রহমান এ বিষয়ে কারণ ব্যাখ্যা করবেন।

গত ২০ মে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘জামিন নেওয়া শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন ২১ মে আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী আলী আহসান মোল্লা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেওয়া কলেজ শিক্ষার্থী মো. আশ্রাফুল হাওলাদারকে আটক করে আদালতে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাতে আসামির বাড়ি থেকে আটকের পর শুক্রবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়।

এসময় পুলিশকে হাইকোর্টের জামিনের কপি দেখালে তা আমলে নেয়নি বলে দাবি আসামির পরিবারের। পরিবারের অভিযোগ, আটকের পর পুলিশ মোটা টাকা দাবি করে। তা দিতে না পারায় পুলিশি ক্ষমতার বলে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।

যদিও হাইকোর্টের জামিননামা দেখে শুক্রবার দুপুরে আসামিকে ছেড়ে দিয়েছেন পটুয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. জামাল হোসেন। আশ্রাফুল হাওলাদার পটুয়াখালী সদর উপজেলার মরিচবুনিয়া ইউনিয়নের বাজারঘোনা গ্রামের আব্দুল লতিফ হাওলাদারে ছেলে। এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন জেলা আইনজীবী সমিতি।

আশ্রাফুলের চাচা রাজা মিয়া বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সদর থানা পুলিশের এএসআই মিজানুর রহমান আশ্রাফুলকে আটক করেন। আশ্রাফুলের পরিবার ওই রাতে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী আলী আহসান মোল্লার সই করা প্রত্যয়নপত্র ও জামিননামার অনলাইন কপি দেখায় পুলিশকে।’

এ প্রসঙ্গে এএসআই মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি ওয়ারেন্ট অনুযায়ী আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। এরপর আশ্রাফুলের পরিবার ওসির সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি কাগজপত্র দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’