ফরিদপুরে নির্মাণাধীন সেতুর পাশে মাটি ধসে নিহত ৩ 

Looks like you've blocked notifications!
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার জমাদ্দারডাঙ্গী এলাকায় সেতুর পাশের মাটি ধসে তিন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। ছবি : এনটিভি

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার জমাদ্দারডাঙ্গী এলাকায় একটি সেতুর কাজ করার সময় পাশের মাটি ধসে পড়ে তিন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে চারজন। আজ বুধবার (৩১ মে) দুপুর ১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আহসান মাহমুদ রাসেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন সদর উপজেলার কবিরপুর এলাকার আফজাল শেখের ছেলে অন্তর শেখ (২২), একই উপজেলার কুজুরদিয়া এলাকার ইসমাইল মীরের ছেলে জুলহাস মীর (২০) ও বাগেরহাটের মোল্লারহাট উপজেলার উদয়পুর উত্তরকান্দি এলাকার আলামিন খাঁর ছেলে জাবেদ খাঁ (২৩)। 

আহত ব্যক্তিরা হলেন সদর উপজেলার কুজুরদিয়া এলাকার মনির খাঁনের ছেলে সুমন খাঁন (২৭), একই উপজেলার শোলাকুণ্ডু এলাকার রোকন মীরের ছেলে ওহিদুল ইসলাম (৩০), ঘোড়াদহ এলাকার সিরাজ শেখের ছেলে রাসেল শেখ (২৫) ও একই গ্রামের মৃত খালেক শেখের ছেলে নজরুল ইসলাম (৩০)।

আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে সদরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত গোলদার বলেন, সদরপুরের জমাদ্দারডাঙ্গী এলাকায় একটি সেতুর নির্মাণকাজ চলাকালীন সেতুর পাশের রাস্তার মাটি শ্রমিকদের উপর ধসে পড়ে। এ সময় মাটিচাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই তিন জন মারা যান। এ ছাড়া আহত হন অপর চার নির্মাণশ্রমিক। আহতদের উদ্ধার করে সদরপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ওসি আরও জানান, খরব পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার কাজ চালান। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে কর্মরত শ্রমিক ও স্থানীয়রা জানায়, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আরিফের ভাইয়ের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আসিফ ইমতিয়াজ ২৫ মিটার একটি সেতুর কাজ পায়। সেতুর কাজের মূল্য চার কোটি ১৬ লাখ টাকা। সদরপুর উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের জমাদ্দারডাঙ্গী এলাকায় সেই সেতুর কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। সেতুর ক্যাপের রড বাঁধার কাজ করার সময় পাশে থাকা মাটির স্তূপ থেকে মাটি ধসে পড়ে ঘটনাস্থলেই তিন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। আর এ ঘটনায় আহত হয় চার শ্রমিক। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। ঘটনার পর পরই খবর পেয়ে সদরপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কাজে অংশ নেন। এ সময় মাটি সরিয়ে তিন শ্রমিকের মৃতদেহ উদ্ধার করেন তাঁরা। বাকি শ্রমিকদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। 

এ বিষয়ে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, ‘আমরা খবর পাওয়ার পর পরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। এ কাজে কোনো ত্রুটি কিংবা কোনো গাফিলতি থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সেতুতে কর্মরত শ্রমিক সরদার বলেন, ‘আমরা বারবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জানালেও তারা মাটি সরানোর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। মাটির পাশে গাইড ওয়াল দেওয়ার কথা বলা হলেও তারা তা করেনি। তারা উল্টো আমাদের হুমকি দিয়ে কাজ করিয়ে নিচ্ছিল। 

এদিকে হৃদয়বিদারক এই মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।