‘লোডশেডিংয়ে রাইতে ঘুমাইতে পারি না’

Looks like you've blocked notifications!
লোডশেডিংয়ের প্রতীকী ছবি

প্রচণ্ড গরম, তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। এর সঙ্গে আবার যুক্ত হয়েছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। প্রতি ঘণ্টায় কমপক্ষে একবার করে লোডশেডিং হচ্ছে। রাতে অসহনীয় লোডশেডিংয়ে ঘুমাতে পারছে না ঝালকাঠি জেলাবাসী।

শহরের কলাবাগান এলাকার রিকশাচালক মো. মাসুম খান বলেন, ‘দিনের বেলায় রাস্তায় থাহি। গরম হজম হইয়্যা গ্যাছে। এত দিন রাইতে একটু আরামে ঘুমাইছিলাম, এহন রাইতের ঘুমও হারাম হইয়্যা গ্যাছে। রাইতে তিন-চাইরফির কারেন (বিদ্যুৎ) যায়—ঘুমামু ক্যামনে?’

শহরের কুমারপট্টির বাসিন্দা মাহাবুব হোসেন বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমে দিনের বেলা লোডশেডিং চলতে থাকে, রাতেও বিদ্যুৎ থাকে না। এমন পরিস্থিতিতে আমরা শহরবাসী অস্বস্তির মধ্যে আছি। রাতের লোডশেডিং মেনে নেওয়া যায় না। ঘুমের সমস্যা হচ্ছে। বাচ্চারা পড়ালেখা করতে পারছে না।’

বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পনির (ওজোপাডিকো) আওতাধীন ঝালকাঠিতে পাঁচটি ফিডারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এতে প্রতি ঘণ্টায় ১০ মেগাওয়াট করে ২৪ ঘণ্টায় ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেলে লোডশেডিং হবে না। কিন্তু চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ কম পাওয়ায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। বর্তমানে জেলায় বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে ঘণ্টায় আট মেগাওয়াট, তাতে ২৪ ঘণ্টায় পাওয়া যায় সর্বোচ্চ ১৯২ মেগাওয়াট। ঘাটতি হচ্ছে ৪৮ মেগাওয়াট। এই ৪৮ মেগাওয়াটই লোডশেডিং দিতে হচ্ছে পাঁচটি ফিডারে। এই পরিসংখ্যান শুধু ওজোপাডিকোর।

এ ছাড়া পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের মাত্রা আরও ভয়াবহ। দিনে ও রাতে সমানতালে চলছে তাদের লোডশেডিং। এতে দিশেহারা গ্রামের মানুষও।

শুধু ঝালকাঠি শহরেই নয়, বিদ্যুতের লোডশেডিং শুরু হয়েছে নলছিটি, রাজাপুর ও কাঁঠালিয়া উপজেলাতেও। তীব্র গরমের মধ্যে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে গ্রাহকরা।

ঝালকাঠি ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বলেন, ‘প্রচণ্ড গরমে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। আমরা চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। ঘণ্টায় ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেলে কোনো লোডশেডিং দিতে হবে না। এর নিচে নামলেই লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। আশা করি এ অবস্থা বেশি দিন থাকবে না।’

ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘গরমে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বেশির ভাগই জ্বর, সর্দি-কাশি ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।’ গরমে রোদে বের না হতে এবং বেশি বেশি পানি পান করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।