মামলার তদন্ত নিয়ে বিচারপতিকে এসপির ফোন, হাইকোর্টের অসন্তোষ

মানিকগঞ্জ সদরের কৈতরা গ্রামের মো. রুবেল (২২) হত্যার ঘটনায় মাত্র ৪২ ঘণ্টায় চার্জশিট জমা দিয়েছিল পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদুর রহমান। এ ঘটনায় ওই এসআইকে বরখাস্তের নির্দেশ দিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপারের (এসপি) নিচে নয় এমন এক কর্মকর্তাকে দিয়ে মামলার তদন্ত করতে নির্দেশ দেন আদালত। এরপরই পিবিআইয়ের এসপির পদ মর্যাদার একজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতিকে ফোন দেন। এ ঘটনায় অসন্তোষ জানিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে হত্যা মামলাটির পুনঃতদন্ত করে চার্জশিট দাখিলের জন্য আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত সময় দিয়েছেন আদালত।
আজ সোমবার (৫ জুন) বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আজ মামলাটির পুনঃতদন্তের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তারিখ ছিল। তবে, সেটি আজ জমা দিতে পারেনি তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ মামলায় চার্জশিট দাখিলের জন্য সময় আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। শুনানির সময় হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘এর আগে তো ৪২ ঘণ্টায় চার্জশিট দিয়েছিলেন। এখন এত দেরি হচ্ছে কেন?’
শুনানির একপর্যায়ে আদালত বলেন, ‘এ মামলার বিষয়ে একজন পিবিআই কর্মকর্তা আমাদের ফোন দিয়ে বিব্রত করার চেষ্টা করেছেন। এটা অনাকাঙ্ক্ষিত। বিষয়টি আদালত অবমাননার শামিল। তারা এটা করতে পারেন না।’
এ সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী বলেন, ‘এটা ঠিক হয়নি। তাদের পক্ষে কথা বলার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে কর্মকর্তারা রয়েছেন। আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’
গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে মানিকগঞ্জ সদরের কৈতরা গ্রামের একটি হ্যাচারিতে খুন হন মো. রুবেল। এ ঘটনায় হত্যার পরদিন নিহতের স্ত্রী বাদি হয়ে সোহেল নামের একজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। রুবেল হত্যার ঘটনায় মরদেহ উদ্ধার থেকে শুরু অভিযোগপত্র ও ৪২ ঘণ্টার অবিশ্বাস্য তদন্তের ঘটনায় পুলিশের এসআই মাসুদুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপারকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। একইসঙ্গে রুবেল হত্যা মামলা পিবিআই প্রধানকে পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
পুলিশ সুপারের নিচে নয় এমন পিবিআইয়ের কর্মকর্তাকে দিয়ে ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করতে বলা হয়। পরে, মাসুদুর রহমানকে বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। মামলাটি পুনরায় তদন্ত করতে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।