গাজীপুরে জামাতুল আনসারের তিনজন অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার

Looks like you've blocked notifications!
র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া জামাতুল আনসারের তিনজন। ছবি : র‌্যাবের মিডিয়া সেল

নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র তিন সদস্যকে অস্ত্র ও বিপুল নগদ অর্থসহ গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। আজ মঙ্গলবার (৬ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান বাহিনীর মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

র‍্যাব জানায়, গতকাল সোমবার (৫ জুন) দিনগত রাতে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার ওই তিন সদস্য সাংগাঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য গাজীপুর থেকে টাঙ্গাইলের মধুপুর বনাঞ্চলের দিকে যাচ্ছিলেন। সিএনজি করে যাওয়ার পথে রাজেন্দ্রপুরে র‌্যাব চেকপোস্টে তল্লাশির সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় একটি বিদেশি পিস্তল ও নগদ ১২ লাখ ৪০ হাজার টাকাসহ বিভিন্ন উগ্রবাদী লিফলেট উদ্ধার করা হয়।

খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘নতুন জঙ্গি সংগঠনের সূরা সদস্য ও অর্থ শাখার প্রধান মোশারফ হোসেন রাকিবসহ তিন সদস্যকে বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল অর্থসহ গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা গাজীপুর হয়ে টাঙ্গাইলের মধুপুরের দিকে যাচ্ছিলেন। র‌্যাব-১ ও র‌্যাব-৭ এর একটি আভিযানিক দল গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় চেকপোস্ট স্থাপন করে একটি সিএনজি থেকে সংগঠনের শুরা সদস্য ও অর্থ শাখার প্রধান মোশারফ হোসেন রাকিব, জাকারিয়া হোসাইন এবং আহাদুল ইসলাম মজুমদার সিফাত ওরফে মামিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় আরও কিছু সদস্য পালিয়ে যায়।’

কমান্ডার মঈন বলেন, ‘পাহাড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের কারণে তারা চলে এসেছেন। এসব সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নেওয়া সদস্যরা বিভিন্ন অপরাধের জন্য সংগঠিত হচ্ছিলেন।’

নতুন জঙ্গিদের আমির দেশের অভ্যন্তণেই আছেন

নতুন এই জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র আমির আনিসুর রহমান ওরফে মাহমুদ দেশের অভ্যন্তরেই আছেন। তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাননি। তবে, কোথায় আছেন, সেটা নিশ্চিত করতে র‌্যাবের গোয়েন্দারা কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন খন্দকার আল মঈন।

নতুন জঙ্গি দলের সদস্যরা তাদের আমিরের নির্দেশে বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছেন। তাহলে আমিরকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, আমিরের নির্দেশেই তারা সব করছেন। আমরা আমিরের অবস্থান জানতে প্রতিনিয়ত কাজ করছি। যতটুকু তথ্য আছে তাদের আমির আনিসুর রহমান ওরফে মাহমুদ দেশের অভ্যন্তরেই আছেন। তবে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাননি। তাকে আইনের আওতায় আনতে গোয়েন্দারা কাজ করছেন।’

র‌্যাব বলছে, ‘সংগঠনের আমির আনিসুর রহমান ওরফে মাহমুদের সঙ্গে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফের প্রধান নাথান বমের সুসম্পর্ক ছিল। নাথান বমের সঙ্গে তাদের অর্থের বিনিময়ে চুক্তি হয়। এরপর তারা পাহাড়ে আশ্রয়, অস্ত্র ও রসদ সরবরাহ এবং সশস্ত্র প্রশিক্ষণ দেয়। বিভিন্ন সময় কেএনএফের প্রধান নাথান বম, বাংচুং, রামমোয়, ডিকলিয়ান, পাহল ও কাকুলিসহ অনেকেই প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে আসত।’

কতজন সদস্য এই দলে আছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ৫৫ জনের নাম দিয়েছি। আমাদের ধারণা, এখন পর্যন্ত তাদের সদস্য সংখ্যা শতাধিক। অনেক ক্ষেত্রে সদস্য সংখ্যা বলা কঠিন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অব্যাহত অভিযানের কারণে তারা আত্মগোপনে আছেন। তবে, সদস্য সংখ্যা সঠিকভাবে বলা যায় না। অনেকে গোপনে সদস্য হয়ে আছেন, কিন্তু অভিযানের কারণে চুপচাপ রয়েছেন। জঙ্গি রাকিব, মাঈনুলের মাধ্যমে একটা দল সদস্য হয়েছে। তাদের মধ্যে এ ধরনের চেইন আছে।’

নির্বাচন ঘিরে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা আছে কি—না এমন প্রশ্নে মঈন বলেন, ‘জঙ্গিদের মুভমেন্ট বা কোনো কর্মকাণ্ডের তথ্য পেলেই আমরা আইনের আওতায় আনছি। নির্বাচন ঘিরে কোনো তৎপরতা আছে, এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে আসেনি।’

খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, ‘মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে জঙ্গিদলের কাছে দেশ-বিদেশ থেকে টাকা আসছে। এ বিষয়ে আমরা বেশকিছু তথ্য পেয়েছি। পার্বত্য চট্টগ্রামে যেসব তথ্য পাঠানো হয়, তা-ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাঠানো হয়।’