হাইকোর্টে ক্ষমা চাইলেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের আইনজীবী
গাজীপুর সিটি করপোরেশন থেকে বরখাস্তের রায় নিয়ে গণমাধ্যমে ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের আইনজীবী সাজ্জাদ উল ইসলাম। এ ঘটনাকে দুঃখজনক বলে মন্তব্যে করেছেন হাইকোর্ট। পরে আদালতে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি।
আজ সোমবার (১৯ জুন) ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী গণমাধ্যমে এ কথা বলেন।
গতকাল রোববার মেয়র পদ ফিরে পেতে করা মামলা নিষ্পত্তির রায়ের পর আইনজীবী সাজ্জাদ উল ইসলাম বলেন, ‘আদালত রিট মামলাটি নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন। আদালত পর্যবেক্ষণ দিয়ে বলেছেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত গ্রহণে যথাযথ আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।’
এমন সংবাদ প্রচারের পর সোমবার ওই আইনজীবীকে তলব করে হাইকোর্ট এ ঘটনাকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন। রায়ে এমন কোনো পর্যবেক্ষণ ছিল না বলেও মন্তব্য করেন হাইকোর্ট। এ সময় নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন আইনজীবী সাজ্জাদ উল ইসলাম।
২০২১ সালের ১৪ আগস্ট গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া জাহাঙ্গীর আলম পদ ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছিলেন। রিটে তাকে সাময়িক বরখাস্তের আইনগত বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। ব্যারিস্টার মশিউর রহমান সবুজ জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে এ রিট দায়ের করেন।
পরে একই বছরের ২৩ আগস্ট গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সচিবসহ সংশিষ্টদের দুই সপ্তহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য মেয়র জাহাঙ্গীরকে ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর দল থেকে বহিষ্কার করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। মেয়র জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ফরিদপুর, রাজবাড়ী, গাজীপুর, নওগাঁ, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, পঞ্চগড়সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় একই অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। পরে ২৫ নভেম্বর তাকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে গোপনে ধারণ করা জাহাঙ্গীর আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন। সম্প্রতি গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয় পেয়ে তার মা জায়েদা খাতুন মেয়র পদে আসীন হন।