জঙ্গিরা সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় : এটিইউ প্রধান

Looks like you've blocked notifications!
এটিইউ প্রধান এসএম রুহুল আমিন সোমবার সকালে রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজের মাল্টিপারপাস হলে এক কর্মশালায় বক্তব্য দেন। ছবি : বাসস

জঙ্গিরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এন্টি টেরোরিজম ইউনিটের (এটিইউ) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি এসএম রুহুল আমিন। তিনি বলেন, ‘জঙ্গিরা চুপ করে বসে নেই। জঙ্গিবাদ শেষ হয়ে গেছে এমনটি ভেবে আত্মতৃপ্তির কিছুই নেই। জঙ্গিরা সোশ্যাল মিডিয়ায় সব সময় সক্রিয় রয়েছে। এন্টি টেরোরিজম ইউনিটের সাইবার অনলাইন পেট্রোলিংয়ে তা উঠে এসেছে।’

সোমবার (১৯ জুন) সকালে রাজধানীর মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজের মাল্টিপারপাস হলে ‘উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ ও সহিংস চরমপন্থা প্রতিরোধে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন এটিইউ প্রধান এস এম রুহুল আমিন।

এটিইউ প্রধান বলেন, ‘জনসাধারণের নিরাপত্তা ও সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। অপরাধ অনেকটা কমে গেছে, তবে বসে নেই জঙ্গিরা।’ 

এই অতিরিক্ত আইজিপি বলেন, ‘অনলাইনে জঙ্গিদের কার্যক্রম, কীভাবে একজন তরুণ জঙ্গিবাদে জড়াচ্ছে এবং তার বিপদ ও ভয়াবহতা নিয়ে জনসাধারণকে সচেতন করার সুযোগ গণমাধ্যমকর্মীদের আছে।’

পুলিশ ও সাংবাদিকদের মধ্যে সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে এটিইউ প্রধান এসএম রুহুল আমিন বলেন, ‘পুলিশ কী চায়? পুলিশের পক্ষ থেকে দেখলে বলা যায়, গণমাধ্যম ছাড়া পুলিশের কাজের সুযোগ নেই। পুলিশ চায়, পজিটিভ কাজগুলো গণমাধ্যমে উঠে আসুক।’

পুলিশ-সাংবাদিক সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো উল্লেখ করে এটিইউ প্রধান বলেন, ‘বর্তমানে তথ্যের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। ৭ ধারায় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব সমুন্নত রাখার স্বার্থে আমরা তথ্য দিয়ে থাকি। দেশপ্রেমের জায়গা থেকে যদি সবাই কাজ করি, তাহলে সমাজের জন্য ক্ষতিকর কিছু ঘটবে না।’ 

গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার কথা উল্লেখ করে সাংবাদিকদের উদ্দেশে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘তথ্য পরিবেশনের ক্ষেত্রে দুটি উৎস রয়েছে, একটা আমরা দিই, আরেকটা আপনারা সরেজমিনে পেয়ে থাকেন। এরকম একটি কাজ ছিল হলি আর্টিজানে হামলার সময়। গণমাধ্যমকর্মীদের কাজের কারণে জঙ্গিরা ভেতর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান জেনে গিয়েছিল। এসব ক্ষেত্রে সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।’   

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর ড. এ এফ এম মাসুম রব্বানী বলেন, ‘জঙ্গি-উগ্রবাদ সংক্রান্ত আমাদের ডেটা সিস্টেম অনেক বেশি আপডেট থাকা দরকার। তার কারণ হলো, উগ্রবাদে যারা জড়ায়, তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরা অনেক বেশি কঠিন।’

এটিইউর ডিআইজি (অপারেশন্স) মনিরুজ্জামান বলেন, ‘জঙ্গিবাদ বাংলাদেশের জন্য বড় একটি বাধা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিধি-বিধান সংবিধানের আলোকে জঙ্গিবাদ দমনে কাজ করছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার আলোকে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।’

সামনে আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে ডিআইজি মনিরুজ্জামান বলেন, ‘জনগণ আমাদের পাশে আছে, পুলিশ জনগণের আস্থা অর্জন করতে পেরেছে। তবে, আমাদের যেতে হবে অনেক দূর। এ ক্ষেত্রে আমাদের জন্য অনেক বেশি সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে গণমাধ্যম।’

এটিইউর ডিআইজি (প্রশাসন) মফিজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শবনম আজিম।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ) (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইং) পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান, এএসপি (মিডিয়া) ওয়াইদা পারভীন, সংস্থাটির সাইবার ক্রাইম ইউনিটের পুলিশ সুপার (এসপি) ফারহানা ইয়াসমিনসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।