ইইউ যত খুশি নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক পাঠাক, আপত্তি নেই : ইসি
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) যত খুশি ‘নিরপেক্ষ’ পর্যবেক্ষক পাঠাক, তাতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কোনো আপত্তি নেই বলে মন্তব্য করেছেন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
আজ মঙ্গলবার (১১ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সফররত ইইউ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময় এই মন্তব্য করেন ইসির অতিরিক্ত সচিব।
পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদনগুলো এলে ভালো হয়। আরও কিছু ফর্মালিটিস (আনুষ্ঠানিকতা) আছে। সেক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স (অনাপত্তি) দরকার হবে। তারা যদি নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক পাঠায় যত খুশি তত, কোনো আপত্তি নেই নির্বাচন কমিশনের।’
বৈঠকের আলোচ্য তুলে ধরে অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘তারা (ইইউ প্রতিনিধিদল) বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। আমাদের ভোটার, ভোটকেন্দ্র, পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয় ও সিসি ক্যামেরার বিষয়ে তারা জানতে চেয়েছেন। তাদের একটা টেকনিক্যাল টিম আমাদের সঙ্গে ১৮ অথবা ১৯ জুলাই বৈঠক করবেন। আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থাপনার কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তাদের যে জিজ্ঞাসা ছিল, কমিশন তাদের সন্তুষ্ট করেছে। তারা সন্তুষ্ট।’
ইইউ প্রতিনিধিদল কোনো শর্ত দেয়নি জানিয়ে অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘তারা আমাদের পরিস্থিতি দেখেছে। আমাদের প্রস্তুতি দেখেছে। যত খুশি পর্যবেক্ষক পাঠাতে পারবে, তাতে কোনো লিমিটেশন (সীমা) নেই।’
অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বলেছে ৯১১টা নির্বাচন (এই কমিশন) করেছে। সেক্ষেত্রে তারা সন্তুষ্ট। পরিবেশ নিয়েও সন্তুষ্ট। তারা আরও বিস্তারিত আলোচনা করবে।’
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কোনো কথা হয়নি জানিয়ে অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনে আনা নিয়ে তারা আমাদের কাছে কিছু জানতে চায়নি। তারা জানতে চেয়েছে ভোটার সংখ্যা কত।’
ইইউর প্রতিনিধিদল কমিশনের সক্ষমতা নিয়ে সন্তোষ-অসন্তোষ কিছুই প্রকাশ করেনি বলে জানান অশোক কুমার। তিনি বলেন, ‘আমাদের দ্বাদশ নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। কমিশন ফেয়ারলি নির্বাচন করতে সক্ষম কি না, তা জানতে চেয়েছে। তারা সন্তুষ্ট হয়েছে।’
বৈঠকের পর সফররত ইইউ প্রাক-নির্বাচনি প্রতিনিধিদলের প্রধান চেলেরি রিকার্ডো সাংবাদিকদের জানান, প্রাক-নির্বাচনী পরিস্থিতি মূল্যায়নের পর তারা সিদ্ধান্ত নেবেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবেন কি না।
চেলেরি রিকার্ডো বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে দুই সপ্তাহের সফরে এসেছি। আমরা প্রাক-নির্বাচনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠাব। তার ভিত্তিতে আগামী নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি না সেই সিদ্ধান্ত হবে।’
প্রতিনিধিদলের এই সফর ‘গণমাধ্যমে গুরুত্ব পাওয়ার মতো না হলেও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য’ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান চেলেরি রিকার্ডো। এ সময় প্রতিনিধিদলের প্রধান বাংলাদেশ সরকারকেও ধন্যবাদ জানান। চেলারি রিকার্ডো এ সময় সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন নিতে অস্বীকৃতি জানান।
বৈঠকের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘মিস্টার রিকার্ডো যেটা বলেছেন ওটাই আমার বক্তব্য।’
বৈঠকে ইইউর প্রতিনিধিদলের পাঁচ সদস্য, সিইসির সঙ্গে অন্য নির্বাচন কমিশনার এবং ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।