উৎপাদিত মাছ স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ করতে সরকারের পদক্ষেপ রয়েছে : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
উৎপাদিত মাছ যাতে মানবস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ রয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি আরও জানান, ২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ লাখ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার (২৪ জুলাই) সকালে রাজধানীর মৎস্য ভবনে মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মন্ত্রী।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল কাইয়ূম, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী আরও জানান, ২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৫ লাখ মেট্রিক টন, যা বর্তমান উৎপাদনের চেয়ে এক দশমিক আট গুণ বেশি। উৎপাদিত মাছ যাতে মানব স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ রয়েছে।
মন্ত্রী আরও জানান, ২০২০ সালে মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ আইন করা হয়েছে। সমুদ্র সীমাসহ অন্যত্র যারা মাছ আহরণে সম্পৃক্ত তাদের প্রতিটি নৌযানে যান্ত্রিক পদ্ধতি সংযোজন করা হচ্ছে, যাতে তাদের মনিটরিং এর আওতায় রাখা যায়। পাশাপাশি কোনো মৎস্য নৌযান দুর্ঘটনায় পতিত হলে তাদের অবস্থান জানার জন্যও এই পদ্ধতি কাজে লাগানো হচ্ছে। এভাবে মৎস্য খাতে ডিজিটালাইজড পদ্ধতি যুক্ত করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘নিরাপদ মাছে ভরব দেশ, গড়ব স্মার্ট বাংলাদেশ—প্রতিপাদ্য নিয়ে এ বছর ২৪ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন করা হচ্ছে। এ উপলক্ষে কেন্দ্র থেকে প্রান্তিক পর্যায়ে নানা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এবারের কর্মসূচির অন্যতম লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট মৎস্য খাত গড়ে তোলা। স্মার্ট মৎস্য খাতে উৎপাদন, বিপণন, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও রপ্তানির প্রক্রিয়ায় স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মৎস্য খাত থেকে সর্বোচ্চ অবদান রাখার লক্ষ্য নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কাজ করছে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত মাছ উৎপাদন এবং দেশে ও বিদেশে সরবরাহের জন্য সরকার দেশে আন্তর্জাতিকমানের পরীক্ষাগার তৈরি করেছে। পরীক্ষাগারে পরীক্ষার মাধ্যমে বিদেশিদের চাহিদা অনুযায়ী মাছ রপ্তানি করা হচ্ছে। অন্যদিকে, বিদেশ থেকে মাছের জন্য যেসব খাদ্য উপাদান আসে সেগুলোও এ পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হচ্ছে, যাতে মাছ উৎপাদন, আহরণ ও বিপণনে অস্বাস্থ্যকর কোনো উপাদান প্রবেশ করতে না পারে।’ তিনি বলেন, ‘শুধু মাছ উৎপাদন নয়, বরং স্বাস্থ্যসম্মত ও খাবার উপযোগী নিরাপদ মাছ উৎপাদন সরকারের লক্ষ্য। আগে আমাদের লক্ষ্য ছিল মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি। এখন আমাদের লক্ষ্য দেশে স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা।’
‘পৃথিবীর ৫২ টি দেশে বাংলাদেশের মাছ রপ্তানি হয়’ উল্লেখ করে শ ম রেজাউল বলেন, ‘২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ৭০ হাজার মেট্রিক টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে দেশের আয় হয়েছে চার হাজার ৭৯০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। মাছ রপ্তানির মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।’