গুলিবিদ্ধ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার মৃত্যু, উত্তাল ভেড়ামারা  

Looks like you've blocked notifications!
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় প্রতিপক্ষের হামলায় গুলিবিদ্ধ পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগনেতার মৃত্যুতে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের দমনে পুলিশের অ্যাকশন। ছবি : এনটিভি

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় প্রতিপক্ষের হামলায় গুলিবিদ্ধ পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক সঞ্জয় কুমার প্রামাণিক (৩৫) ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। হামলায় আহত হওয়ার এক সপ্তাহ পর তিনি আজ বুধবার (৯ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। নিহত সঞ্জয় কুমার প্রামাণিক ভেড়ামারা শহরের গোডাউন মোড় এলাকার দুলাল প্রামাণিকের ছেলে।

এদিকে সঞ্জয় কুমারের মৃত্যুর খবরে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভেড়ামারা শহর। হামলার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবিতে কুষ্টিয়া-দৌলতপুর আঞ্চলিক সড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় দুটি বাড়ি ও তিনটি দোকানে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি বাজারের সব দোকানপাটও বন্ধ করে দেয় উত্তেজিত কর্মীরা। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে পুলিশের সাথে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

পরে ভেড়ামারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান মিঠু ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামিমুল ইসলাম ছানা এসে উত্তেজিত কর্মীদের শান্ত করে বাড়ি ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানালে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

এর আগে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহুরুল ইসলাম সঞ্জয় কুমার প্রামাণিকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ নিয়ে তার স্বজনরা ঢাকা থেকে কুষ্টিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন, সন্ধ্যার আগেই ভেড়ামারা পৌঁছাবেন। 

জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব বিরোধে গত ২ আগস্ট বুধবার রাত ১১টার দিকে ভেড়ামারা শহরের গোডাউন মোড় এলাকায় প্রতিপক্ষের হামলায় সঞ্জয় গুলিবিদ্ধসহ মোট তিন জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে সঞ্জয়কে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। মাথায় গুরুতর আঘাত পাওয়া সঞ্জয় এক সপ্তাহ মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে হেরে গেলেন।’

ওসি জহুরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘সঞ্জয় আহত হওয়ার পর তার স্ত্রী বীথি রানী দে জাসদ যুবজোটের জেলা কমিটির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মুস্তাফিজুর রহমান শোভনসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে ভেড়ামারা থানায় মামলা করেন। পুলিশ প্রধান আসামি শোভনসহ এজাহারভুক্ত মোট পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। বর্তমানে ভেড়ামারা শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। শহরে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে,  পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত আছে।’ 

বর্তমানে ভেড়ামারা শহরের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে বলেও জানায় ওসি।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় একটি মন্দিরের কমিটি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে সঞ্জয় কুমার প্রামাণিক ও যুবজোট নেতা মুস্তাফিজুর রহমান শোভনের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে গত ২ আগস্ট বুধবার রাত ১১টার দিকে ভেড়ামারা শহরে গোডাউন মোড় এলাকায় সঞ্জয় কুমার প্রামাণিকসহ তিন জনের উপর হামলা করে প্রতিপক্ষ।