নাইকো দুর্নীতি মামলা বাতিল চেয়ে খালেদা জিয়ার আবেদনের শুনানি কাল

Looks like you've blocked notifications!
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ফাইল ছবি

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলা বাতিল চেয়ে আবেদনের শুনানি আগামীকাল পর্যন্ত মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট। আগামীকাল সোমবার (২৮ আগস্ট) সকাল ১১টা থেকে এ মামলার পরবর্তী শুনানি শুরু হবে।

আজ রোববার (২৭ আগস্ট) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। 

আজ বেগম খালেদা জিয়ার আবেদন শুনানির এক পর্যায়ে হাইকোর্ট বলেন, ‘এখন আমরা আগাম জামিন আবেদন শুনবো। আজ আর নাইকো মামলা শুনবো না। আগামীকাল বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী ১৫ মিনিট সময় পাবেন শুনানির জন্য। এরপর দুদক শুনানি করবে, তারপর রাষ্ট্রপক্ষ।’

এ সময় দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান আদালতকে বলেন, ‘অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী সব কাজ ফেলে এখানে এসেছেন শুনানি করতে। কাজেই তাকে শুনানি করার সুযোগ দিন।‘ এতে আপত্তি জানান বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী।

তখন এ জে মোহাম্মদ আলী আদালতকে বলেন, ‘উনার সময়ের দাম আছে, আমরা কি কোর্টে ভেরেন্ডা ভাজতে (অকাজে কালক্ষেপণ) এসেছি?’ এতে কোর্টে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। এরপর আবারও শুনানি শুরু করেন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী। তার শুনানি শেষ হলে ৪টা ১০ মিনিট থেকে শুনানি শুরু করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী।

গত ১৭ মে নাইকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আর গত ৯ আগস্ট এই মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের আবেদনের শুনানি শুরু হয় হাইকোর্টে। সেদিন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। দুদকের পক্ষে ছিল অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। 

গত ১৯ মার্চ নাইকো মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান এ আদেশ দেন।

বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া অভিযোগপত্রভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ এইচ সেলিম ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ। এর মধ্যে এ কে এম মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়।

কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর বেগম খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডার কোম্পানি নাইকোর হাতে তুলে দেওয়ার মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন। ২০০৮ সালের ৫ মে এ মামলায় বেগম খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। এতে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।