গৃহবধূকে জিমে আটকে মারধর, ছাত্রলীগের সহসভাপতিসহ গ্রেপ্তার ৩

Looks like you've blocked notifications!
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও বিএস ফিটনেস সেন্টারের (জিম) পরিচালক হাবিবুল্লাহ ভুইয়া বিপ্লব। ছবি : এনটিভি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের একটি ব্যায়ামাগারে (জিম) গোপনে আপত্তিকর ভিডিও ধারনের প্রতিবাদ করায় আটকে এক গৃহবধূসহ দুজনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার (৩০ আগস্ট) সন্ধ্যায় শহরের মৌলভীপাড়ায় বিএস ফিটনেস ক্লাব নামক একটি জিমে এই ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পর ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে তাদের উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে জিমের পরিচালক জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ ভুইয়া বিপ্লব, জিমের ফিটনেস ট্রেইনার মিতু আক্তার ও সাইম নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে সদর মডেল থানা পুলিশ। 

এই ঘটনায় রাতেই ওই গৃহবধূর ভাসুর আইনজীবী গ্রেপ্তারকৃত তিনজনসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও আট-নয়জনকে আসামি করে সদর মডেল থানায় মামলা করেন। রাতে মামলা নথিভুক্ত করার পর ওই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। 

লিখিত অভিযোগ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ওই গৃহবধূ ও তাঁর বোন শহরের মৌলভীপাড়ায় বিএস ফিটনেস সেন্টারে নিয়মিত ব্যায়াম করেন। সেখানে মেয়েদের ব্যায়াম করার আলাদা ব্যবস্থা এবং সেখানে পুরুষ যাওয়ার অনুমতি না থাকায় দুই বোন ভর্তি হন। তবে জিমের ট্রেইনার মিতু আক্তার গোপনে ভিডিও ধারণ করেন বলে তাঁদের  সন্দেহ হয়। গত দুদিন আগে তাঁরা নিশ্চিত হন ট্রেইনার মিতু গোপনে তাদের ভিডিও ধারণ করেছেন। গতকাল বিকেলে তাঁরা দুই বোন ট্রেইনার মিতুকে ভিডিও করার কথা জিজ্ঞেস করলে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে ট্রেইনার মিতু জিমের পরিচালক জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ ভুইয়া বিপ্লবকে জানান। এই খবর পেয়ে বিপ্লব তাদের দুই বোনের কাছে যান মিতুকে নিয়ে। সেখানে মিতু ওই গৃহবধূর চুলের মুঠি ধরে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে জিমে থাকায় শহরের উত্তর পৈরতলার সোহেল মিয়া নামের এক যুবক তাঁদের বাঁচাতে এলে বিপ্লবসহ তাঁর সহযোগীরা তাঁদের সবাইকে লোহার রড দিয়ে বেধরক মারধর করে আটকে রাখেন। এই অবস্থায় তাঁদের পরিবারের লোকজন এসে জিমে ঢুকতে পারেরনি। আশপাশের সড়কে উৎসুক মানুষ জমায়েত হয়ে ভিডিও করে ঘটনাটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়।  

শেষে ৯৯৯-এ কল দিলে সদর মডেল থানা পুলিশ এসে মারধরের শিকার দুই বোন ও সোহেলকে উদ্ধার করে। গণরোষানল থেকে বাঁচাতে জিমের পরিচালক জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ ভুইয়া বিপ্লব, ট্রেইনার মিতু আক্তার ও সাইমকে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। গুরুতর আহত হওয়ায় ওই গৃহবধূ ও সহায়তা করতে আসা সোহেলকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসাইন বলেন, ‘জিমের ঘটনায় চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও আট-নয়জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো আসামিদের দুজন জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চিকিৎসা শেষে তাদের আদালতে পাঠানো হবে।