ন্যায্যমূল্য না পেয়ে দুধ সড়কে ঢেলে প্রতিবাদ

Looks like you've blocked notifications!
নওগাঁর মান্দায় ন্যায্যমূল্যের দাবিতে মহাসড়কে দুধ ঢেলে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন খামারিরা। ছবি : এনটিভি

নওগাঁর মান্দায় ন্যায্যমূল্য ও বিক্রির স্থান পরিবর্তনের দাবিতে সড়কে দুধ ঢেলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন খামারিরা। আজ বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার দেলুয়াবাড়ী বাজার এলাকায় নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে এ প্রতিবাদ জানান তাঁরা।

স্থানীয় খামারি ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কয়েশ খামারে ১৬ হাজার ৭৭৫ গাভি থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় তিন হাজার ১৩০ মণ (প্রায় এক লাখ ১৫ হাজার লিটার) দুধ উৎপাদন হচ্ছে। উপজেলার সবচেয়ে বড় দুধের হাট বসে দেলুয়াবাড়ী বাজারে। বাজারটিতে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ হাজার লিটার দুধ আসে। কিন্তু বাজারটিতে স্থানীয় গুটিয়েক ব্যবসায়ী ও ঘোষের সিন্ডিকেটের কারণে খামারিরা দুধের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। সিন্ডিকেটের কারণে বাজারটিতে প্রতি লিটার দুধ ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। এর ফলে খামারিদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। অনেকে খামার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এ বাজারে জায়গাটি সংকীর্ণ হওয়ায় বাইরের ঘোষ কিংবা ব্যবসায়ীরা বড় গাড়ি নিয়ে দুধ কিনতে আসতে পারেন না। এই সুযোগে ব্যাপারীরা সিন্ডিকেট করে খামারিদের কাছ থেকে কম দামে দুধ কিনছেন। 

উপজেলার জোতবাজার গ্রামের গরু খামারি আব্দুল মান্নান জানান, বর্তমানে তাঁর খামারে ৯টি গাভি থেকে প্রতিদিন ১১০ থেকে ১২০ লিটার দুধ উৎপাদন হয়। তিনি দেলুয়াবাড়ী বাজারে দুধ বিক্রি করে থাকেন। গত পাঁচ-ছয় মাস ধরে এই বাজারে প্রতি লিটার দুধ ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুধ দেওয়া একটা গাভি লালন-পালন করতে মাসে অন্তত ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। বর্তমান দুধের যে দাম তাতে তাঁর লোকসান গুনতে হচ্ছে।

খামারিদের সংগঠন মান্দা ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি ফজলে নূর বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যাটা হচ্ছে হাটের বর্তমান জায়গা নিয়ে। সংকীর্ণ জায়গায় দুধের হাট বসায় বাইরের ব্যাপারীরা এই বাজারে আসতে চায় না। এই সুযোগে স্থানীয় গুটিকয়েক ব্যাপারী নিজেরা যোগসাজশ করে খামারিদের কাছ থেকে কম দামে দুধ কিনে থাকেন। আমরা দীর্ঘদিন ধরে বর্তমান দুধের হাটের জায়গা পরিবর্তন করে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে দেলুয়াবাড়ী খরহাটিতে স্থানান্তর করার দাবি জানিয়ে আসছি। মহাসড়কের পাশে দুধের হাট বসলে বাইরের ব্যাপারীরা এখানে আসতে পারবেন। এতে আমরা দুধের ন্যায্যমূল্য পাব বলে আশা করি।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, দেলুয়াবাড়ি দুধের বর্তমান বাজারের জায়গা খুবই সংকীর্ণ ও অস্বাস্থ্যকর। জায়গা সংকটের কারণে বাইরের ক্রেতারা বড় গাড়ি নিয়ে এ বাজারে দুধ কিনতে আসতে পারেন না। এর ফলে দুধের নায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন খামারিরা। হাটের জায়গা পরিবর্তন করে মহাসড়ক সংলগ্ন জায়গায় স্থানান্তর করার কাজ চলছে।

সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে এ কর্মকর্তা বলেন, ‘খামারিরা আমার কাছেও এ ধরনের অভিযোগ করেছেন। আমি হাটে গিয়ে এর সত্যতা পেয়েছি। খুব দ্রুত এ সমস্যার উত্তোরণ ঘটবে।’