বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানার ৬৯তম জন্মদিন আজ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানার ৬৯তম জন্মদিন আজ মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর)। ১৯৫৫ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে শেখ রেহানার পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ও মা ফজিলাতুন নেছা মুজিব এবং তিন ভাইসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করে ঘাতকরা। সেই সময় বোন শেখ হাসিনার সঙ্গে জার্মানিতে অবস্থানের কারণে ওই নারকীয় হত্যাকাণ্ড থেকে বেঁচে যান। পরে দুজনই ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন।
শেখ রেহানা পরে ভারত থেকে লন্ডনে চলে যান, সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেন। আর শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চার বার রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।
দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হয়েও কখনও রাজনীতিতে সক্রিয় হননি শেখ রেহানা। তবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রামে বোন শেখ হাসিনাকে অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতা করে চলেছেন। জনকল্যাণমূলক কাজে সব সময়ই ভূমিকা রেখেছেন শেখ রেহানা। ধানমন্ডিতে তার নামে বরাদ্দ বাড়িটিও দিয়েছেন দেশের কাজে।
১৯৭৭ সালের জুলাই মাসের শেষ দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. শফিক আহমেদ সিদ্দিকের সঙ্গে শেখ রেহানার বিয়ে হয় লন্ডনের কিলবার্নে। শফিক আহমেদ সিদ্দিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং ও ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।
এই দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টির এমপি। একমাত্র ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত এবং আওয়ামী লীগের গবেষণা উইং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) ট্রাস্টি। আর সবার ছোট মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী লন্ডনে ‘কন্ট্রোল রিস্কস’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের গ্লোবাল রিস্ক অ্যানালাইসিস এডিটর।
শেখ রেহানা প্রথম আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পিতা শেখ মুজিবসহ পরিবারের সদস্যদের নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ গড়ে তোলেন। ১৯৭৯ সালের ১০ মে বিশ্বমানবতার কাছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি তোলেন। সেদিন সুইডেনের স্টকহোমে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠান থেকে বোন শেখ হাসিনার পক্ষে প্রথমবারের মতো ঘৃণ্য ওই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি তোলেন। সেদিন শেখ রেহানা ইউরোপের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, জাতিসংঘের মহাসচিব, জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কমিশনের চেয়ারম্যান, আমেরিকার কংগ্রেসের হিউম্যান রাইটস কমিটির চেয়ারম্যান, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের প্রধানদের কাছে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যার বিচারের প্রশ্নে বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন।