ফ্লাইটে উঠে পড়া সেই শিশুর স্বপ্ন হলো পূরণ, উড়োজাহাজে চড়ে গেল কক্সবাজারে

ভিসা ও পাসপোর্ট ছাড়া নিরাপত্তাকর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিমানের আসন পর্যন্ত যেতে পারলেও মেঘের কাছে পৌঁছাতে পারেনি সে। আকাশ থেকে পৃথিবী দেখার সুযোগ হয়নি তার। গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার শিশুটির সেই স্বপ্ন পূরণ করল ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বিক্রয় ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন প্লাজা। প্রতিষ্ঠানটির পৃষ্ঠপোষকতায় ঢাকা থেকে বিমানে চড়ে সে এখন পর্যটন শহর কক্সবাজারে।
‘কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষানীতি’র আওতায় সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে জুনায়েদের স্বপ্ন পূরণের উদ্যোগ নেয় ওয়ালটন প্লাজা। প্রতিষ্ঠানটি এনটিভি অনলাইনকে জানায়, আজ বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি বিমানে চড়ে কক্সবাজার বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় অধরা স্বপ্ন দেখা শিশুটি। এরপর কক্সবাজারের একটি অভিজাত হোটেলে রাখা হয় তাকে।
বিমানে চড়ে কক্সবাজার পৌঁছানোর আনন্দে উচ্ছ্বসিত শিশুটি বলে, ‘নিরাপত্তা পেরিয়ে বিমানে উঠেছিলাম, কিন্তু আকাশে উড়তে পারিনি। অবশেষে আমার সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে ওয়ালটন প্লাজা। তারা ঢাকা থেকে কক্সবাজারে বিমানে করে নিয়ে আসলেন। আমার খুবই ভালো লেগেছে। আমি ওয়ালটনের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
ওয়ালটন প্লাজার চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মোহাম্মদ রায়হান বলেন, ‘ওয়ালটন প্লাজা ব্যবসার পাশাপাশি সর্বদা বিভিন্ন সামাজিক ও আর্ত-মানবতার সেবায় নিয়োজিত রয়েছে। সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রয়োজনে তাদের পাশে এসে দাঁড়ায় ওয়ালটন প্লাজা। এরই ধারাবাহিকতায় সারা দেশে চলমান ওয়ালটন প্লাজার কিস্তি ক্রেতা ও পরিবার সুরক্ষানীতির আওতায় ইতোমধ্যে শতাধিক পরিবারকে ৩২ লাখ টাকার বেশি আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। দেশব্যাপী আলোচিত শিশুটির পরিবারও এসব সুবিধার বাইরে নয়। আমরা যখনই শুনেছি কৃষকের সন্তান বিমানে চড়ার শখ থেকে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে, আমরা তার শখ পূরণ করার উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা এই ছোট্ট ছেলেটির বড় স্বপ্ন অঙ্কুরে বিনষ্ট হতে দিতে চাইনি। ওর এই বড় স্বপ্ন দেখতে পারার সক্ষমতা চলমান থাকুক। স্বপ্ন পূরণে ওর সঙ্গী হতে পেরে আমরা গর্বিত।’
মাদ্রাসা শিক্ষার্থী জুনায়েদের কৃষক বাবা জানান, তার ছেলে আকাশে কোনো বিমান উড়ে যাচ্ছে দেখলে আনমনা হয়ে যেত। কী ভাবত সে-ই জানে। তার ছেলের বিমানে চড়ার স্বপ্ন পূরণ করায় ওয়ালটন প্লাজা কতৃপক্ষকে ধন্যবাদ। জুনায়েদের স্বপ্ন এখন পাইলট হওয়ার। তার সেই স্বপ্ন পূরণে সবার দোয়া ও সহযোগিতা প্রার্থনা করেন তিনি।
গত ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি বিমানে পাসপোর্ট-বোর্ডিং পাস ছাড়াই উঠে পড়েছিল ওই শিশুটি। পরে জানা যায় বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে জুনায়েদ। এরপর থেকেই আলোচনায় রয়েছে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের পারইহাটি গ্রামের শিশুটি। পাইলট হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে চায় শিশুটি এবং সেই শখ থেকে বিমানে চড়ার ইচ্ছা তার, এমনটি নিজেই গণমাধ্যমকে জানায় সে।
এরই মধ্যে গোপালগঞ্জ ওয়ালটন প্লাজা থেকে কিস্তিতে ওয়ালটনের একটি রাইস কুকার কেনেন জুনায়েদের কৃষক বাবা। এরই ধারাবাহিকতায় কিস্তি ক্রেতা সুরক্ষারনীতির আওতায় কৃষক বাবার শখ পূরণ করতে এগিয়ে আসে ওয়ালটন প্লাজা কতৃপক্ষ।