ভুয়া হোল্ডিং নম্বরে অধিগ্রহণের সরকারি অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা ভণ্ডুল

Looks like you've blocked notifications!
খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়ে ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকরা। ছবি : এনটিভি

খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়ে ভূমি অধিগ্রহণে জালজালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া হোল্ডিং নম্বর করে সরকারি অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা ভণ্ডুল করে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান। এ ঘটনায় জড়িত ভূমিদস্যু চক্রের বিরুদ্ধে মামলা করতে উপজেলা ভূমি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং বাতিল করা হয়েছে ছয়টি হোল্ডিং ও সৃষ্ট রেকর্ড।

প্রকৃত ভূমিমালিক ও ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, সেভেন স্টার নামে পরিচিত প্রভাবশালী ভূমিদস্যু সিন্ডিকেটটি স্থানীয় মালিকদের বঞ্চিত করে এবং সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত জমি অধিগ্রহণের শত কোটি টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করে আসছিল। 

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা সূত্রে জানা গেছে, রামগড় স্থলবন্দরের কার্যক্রমকে গতিশীল করতে বারৈয়ারহাট-হেঁয়াকো-রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণের জন্য এলওসি ৩ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এ প্রকল্পে রামগড় বাজার থেকে সোনাইপুল টোলকেন্দ্র পর্যন্ত প্রায় ১৮ একর ভূমি অধিগ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে দেওয়া নোটিশে অনেক হোল্ডিংয়ের প্রকৃত মালিককে দখলদার দেখিয়ে নোটিশ জারির পর ভূমির মালিকদের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সংবাদ সম্মেলনের পাশাপাশি ভুক্তভোগীরা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে লিখিতভাবে আপত্তি ও অভিযোগ উত্থাপন করেন। এতে বিষয়টি নজরে আসে জেলা প্রশাসকের। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর ও ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা এবং তদন্ত কমিটির প্রধান মনজুরুল আলম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, রামগড় মৌজার ১নং সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত ভূমিতে অসংখ্য ভুয়া হোল্ডিং সৃষ্টি ও অধিগ্রহণভুক্ত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত কমিটি মাসব্যাপী শুনানি শেষে ছয়টি ভুয়া হোল্ডিং যথাক্রমে ৭৭১, ৮৮৭, ৭৯৫(ক), ১১০৩, ৭৮৬ ও ৮৮৫ বাতিল করার সুপারিশ করে। এ সুপারিশের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে গত ১৪ সেপ্টেম্বর রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর মনজুরুল আলম তাঁর দপ্তরের স্মারক নং ১৩১২ মূলে সহকারী কমিশনার ভূমিকে তাঁর কার্যালয় এবং ২২৯ নং রামগড় মৌজার হেডম্যানের কার্যালয়ে রক্ষিত জমাবন্ধি বহিতে ছয়টি ভুয়া নোটিং হোল্ডিংস এবং সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্রাদি জরুরি ভিত্তিতে বাতিল করে তাঁর কার্যালয়ে জানানোর নির্দেশ দেন।

সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, এ নির্দেশনার পর গত ২০ সেপ্টেম্বর ছয়টি হোল্ডিং বাতিল করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, রামগড় ভূমি অফিস, রেকর্ড শাখা ও জেলা কানুগোসহ ছয় সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। এর মধ্যে জেলা প্রশাসকের আওতাধীন তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অপর তিনজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিভাগীয় কমিশনার ও ভূমি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। মৌজাপ্রধানকে অপসারণ ও তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পার্বত্য শাসনবিধি অনুযায়ী মং সার্কেল চিফকে (রাজা) চিঠি দেওয়া হয়েছে।