বৃদ্ধ বাবা মারধরের ভিডিও ভাইরাল, আটক মেয়েকে ছাড়ালেন তিনিই

Looks like you've blocked notifications!
চাঁদপুর শহরে মনির হোসেন নামে বৃদ্ধ বাবাকে মারধরের চিত্র। ছবি : ভাইরাল ভিডিও থেকে

চাঁদপুর শহরের মনির হোসেন নামে বৃদ্ধ বাবাকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেই ঘটনায় গতকাল শনিবার (৭ অক্টোবর) সদর মডেল থানার পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে মেয়ে ফাতেমা আক্তার শিল্পীকে আটক করেন। মেয়েকে জেলে দিলে তাঁকে দেখবে কে? সদর মডেল থানা পুলিশকে এমন প্রশ্ন করে তাঁকে ছাড়িয়ে নিয়েছেন সেই বৃদ্ধ বাবাই। 

ফাতেমা আক্তার শিল্পী চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের মাস্টার রোলে ল্যাব অ্যাসিস্টেন্ট পদে কর্মরত। বৃদ্ধ মনির হোসেন খানের কোনো ছেলে নেই, রয়েছে তিন মেয়ে।

বৃদ্ধ মনির খানের প্রতিবেশী শাহজাহান খান ও তাঁর স্ত্রী গোলশান আরা বেগম জানান, মনির খানের ঘর থেকে প্রায় সময়ই বাবা মনির খান ও মেয়ে ফাতেমার উচ্চস্বরে আওয়াজ শোনা যায়। আবার অনেক সময় মনির খানের কান্নাও শোনা যায়। সম্প্রতি মেয়ের সঙ্গে পারিবারিক বিষয় নিয়ে বিবাদ হওয়ায় তাঁকে বিভিন্ন স্থানে বসে থাকতে দেখা যায়। তাঁরা জানতে পেরেছেন বাবার অপরাধ বিছানায় প্রস্রাব করেন। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তিনি নিরুপায়। 

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিওতে দেখা যায় বাবাকে মারধর করছেন মেয়ে। অসহায় বাবা প্রতিবাদ করতে না পেরে মেয়ের দিকে তাকিয়ে আছেন। গতকাল রাতে স্যোসাল মিডিয়ায় বাবাকে মারধরের ঘটনার ওই ভিডিও প্রকাশ করা হয়। তারও আগে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ফাতেমা আক্তার তার বাবা মনির খানকে গোসল করাতে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন। পাশের কোনো ব্যক্তি ওই ভিডিও ধারণ করে পরে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেয়।

চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. মাসুদুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভাইরাল ভিডিওটিতে দেখা যায় ফাতেমা আক্তার শিল্পীকে অনেকেই এই কলেজের শিক্ষক হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। মূলত সে মাস্টার রোলের একজন কর্মচারী এবং ল্যাব অ্যাসিস্টেন্ট পদে কর্মরত। সে কলেজের শিক্ষা সংক্রান্ত কোনো কাজে সম্পৃক্ত নয়। ভিডিওটিতে প্রচারিত ঘটনাটি একান্তই তার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয়। এ বিষয়টি বর্তমানে আইনি প্রক্রিয়াধীন। এমতাবস্থায় কলেজ প্রশাসন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। তারপরও কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অধিকতর অবগতির জন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির তদন্তের ভিত্তিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুসহীন আলম বলেন, ‘ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ সুপারের নির্দেশে আমরা ফাতেমা আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করি। কিন্তু তাঁর বাবা থানায় এসে কোনো অভিযোগ করেননি। বরং তাঁকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেছেন।’

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনার পর পুলিশ ওই মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে এনে রাখা হয়। আজ বিকেলে সেই বৃদ্ধ বাবা এসে কোনো অভিযোগ না করে তাঁকে ছাড়িয়ে নেন।’