প্রতিদিন প্রায় চার কোটি মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার, দাবি ডা. তাহসীন আলমের

Looks like you've blocked notifications!

প্রতিদিন প্রায় তিন কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন বলে দাবি করেছেন সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদের সভাপতি ডা. তাহসীন আলম সায়েম। তিনি আরও দাবি করেন, বিদ্যমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০০৫-এর দুর্বলতার কারণে বাংলাদেশে বিভিন্ন পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহণে পরোক্ষ ধূমপানের শিকারে পরিণত হচ্ছে মানুষ। তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ট্যোবাকো কন্ট্রোল-এফসিটিসির আলোকে আইনের দুর্বলতা চিহ্নিত করে সংশোধনের দাবি জানান।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আজ সোমবার (৯ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব দাবি জানান ডা. তাহসীন আলম সায়েম। তিনি বলেন, ‘জনস্বাস্থ্যকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশক তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসির আলোকে আরও শক্তিশালী ও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (সংশোধিত ২০১৩)-এর সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমানে সেটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

লিখিত বক্তব্যে সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদের সভাপতি আরও বলেন, তামাক ব্যবহারের দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে এবং বিশ্বের নবম বৃহত্তম তামাক ব্যবহারকারী দেশ বাংলাদেশ। তামাক ব্যবহারজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিবছর আমাদের দেশে প্রায় এক লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। অর্থাৎ, প্রতিদিন গড়ে ৪৪২ জন মানুষ মারা যাচ্ছেন। তাই জনস্বাস্থ্যকে বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত আইনটি সংশোধনের দাবি জানাচ্ছি।

তামাক নিয়ন্ত্রণের বৈশ্বিক মানদণ্ডে অনেক পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ উল্লেখ করে ডা. তাহসীন জানান, আইনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত এলাকা (ডিএসএ)’ রাখার সুযোগ এর অন্যতম প্রধান কারণ। হোটেল, রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন জনপরিসর ও গণপরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত এলাকা (ডিএসএ) থাকলে অধূমপায়ীদের পাশাপাশি সেবাকর্মীরাও পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। তাই বিদ্যমান আইনের ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত এলাকা’ (ডিএসএ) রাখার বিধান বাতিল করা প্রয়োজন।

ইতিমধ্যে থাইল্যান্ড, নেপাল, তুরস্ক, যুক্তরাজ্যসহ ৬৭টি দেশ পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি হ্রাসে শতভাগ ধূমপানমুক্ত আইন বাস্তবায়ন করেছে।

সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মণিলাল আইচ লিটু বলেন, বর্তমান আইনে বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞা না থাকায় তরুণ ও শিশুদের আকৃষ্ট করতে বিক্রয়স্থলের দৃশ্যমান স্থানে তামাকপণ্যের প্যাকেট সাজিয়ে রাখা হচ্ছে। তরুণদের সুরক্ষায় সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াসহ ৫০টি দেশ বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ করেছে। বাংলাদেশেরও বিক্রয়স্থলে তামাকপণ্যে প্যাকেট প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন।