মালয়েশিয়ায় নিখোঁজ ছেলের সন্ধান চেয়ে মা-বাবার সংবাদ সম্মেলন

Looks like you've blocked notifications!
পাবনা আটঘরিয়া উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের কাজিপাড়া গ্রামে মালয়েশিয়ায় নিখোঁজ ছেলের সন্ধান চেয়ে মা-বাবার সংবাদ সম্মেলন। ছবি : এনটিভি

দুলাল হোসেন তাঁর একমাত্র ছেলে মিরাজুল মণ্ডলকে (৩২) মালয়েশিয়ায় পাঠিয়েছিলেন। তিনি প্রায় চার বছর ধরে নিখোঁজ সেখানে। ছেলেকে হারিয়ে নিঃস্ব প্রায় তিনি। তাই নিখোঁজ সন্তানের সন্ধান চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মা-বাবা। আজ রোববার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে পাবনা আটঘরিয়া উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের কাজিপাড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান তাঁরা।

মালয়েশিয়ায় যাওয়ার কয়েকদিন পর থেকেই খোঁজ মিলছে না মিরাজুল মণ্ডলের। দীর্ঘদিন ধরে ছেলের খোঁজে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনশক্তি ব্যুরো, মালয়েশিয়ান হাইকমিশনার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রশাসনসহ বিভিন্ন জায়গায় ধরনা দিয়েও কোনো ধরনের সমাধান পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী মা-বাবা।

বাবা দুলাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘২০১৮ সালের মার্চে ঢাকার মেসার্স ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় পাঠাই ছেলেকে। যাওয়ার পর প্রায় দেড় বছর ভালোই ছিল। এরপর থেকে ছেলে সে তার রুমমেট মিলন, ফরহাদ এবং এজেন্ট রুহুল আমিন স্বপনের সঙ্গে বিরোধের কথা জানায়। তারা বিভিন্ন সময় আমার ছেলেকে হুমকি-ধমকি দিত, টাকা-পয়সা জোর করে কেড়ে নিত। এরই একপর্যায়ে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস থেকে আমার ছেলের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে আমি এজেন্ট স্বপন এবং স্থানীয় দালাল মজনু বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা আমার ছেলের সন্ধান দেওয়ার কথা বলে চার লাখ টাকা নিয়েছে। কিন্তু আমার ছেলের কোনো সন্ধ্যান দিতে পারেনি।’

দুলাল হোসেন আরও অভিযোগ করেন, ‘পরবর্তী সময়ে  এজেন্ট স্বপন এবং স্থানীয় দালাল আমাকে সমঝোতার অনৈতিক প্রস্তাব দিতে থাকে। কিন্তু আমি আমার ছেলেকে মৃত অথবা জীবিত পাওয়ার দাবি জানাই। এরপর থেকে তারা আমাকে বিভিন্ন সময় হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। বিষয়টি নিয়ে আমি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো, মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করি এবং মানবপাচার দমন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দিই। এর পরও আমি কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। আমরা গরিব ও অসহায় পরিবার। ছেলেকে বিদেশ পাঠাতে এবং স্ত্রীর ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে জমিজমা বিক্রি করে পথে বসে গেছি। এরপর ছেলের সন্ধান পেতে বিভিন্ন দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো খোঁজ পাচ্ছি না।’

মিরাজুলের মা-রিতা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘‘আমি আমার সন্তানের সন্ধ্যান চাই জীবিত অথবা মৃত অবস্থায়। মৃত্যু হলেও অন্তত তার মরদেহ ও মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে চাই। আমরা গবির মানুষ আর কেথায় গেলে আমার সন্তানের খোঁজ পাব? কেউ আমাদের সঠিকভাবে সাহায্য করছে না।’

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত এজেন্ট রুহুল আমিন স্বপন (০১৭১০০৩....) ও দালাল মজনু বিশ্বাসের (০১৯২১৮৮....) সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।