হামুন মোকাবিলায় লক্ষ্মীপুরে প্রস্তুত ২৮৫ আশ্রয়কেন্দ্র

Looks like you've blocked notifications!
লক্ষ্মীপুরে ঘূর্ণিঝড় হামুন মোকাবিলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা। ছবি : এনটিভি

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় হামুন মোকাবিলায় লক্ষ্মীপুরে ২৮৫ স্থায়ী ও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত। চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে ইউনিয়ন পর্যায়ে ৬৪টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুরাইয়া জাহান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বঙ্গোপসাগরের কাছাকাছি জেলা হওয়ায় আবহাওয়া অধিদপ্তর লক্ষ্মীপুরকে সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে। জেলার সব দপ্তরের কর্মকর্তাদের কর্মস্থলে থাকার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। জরুরি প্রয়োজনে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোলরুম ও হটলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে।

ডিসি জানান, ২৮৫টি আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে ১৮৫টি স্থায়ী ও ১০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে অস্থায়ী হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ কেন্দ্রগুলোয় ১০ লাখ পাঁচ হাজার ২৫০ জনের ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। ত্রাণের জন্য ছয় লাখ ২০ হাজার টাকা, ৪৫০ মেট্রিক টন চাল মজুদ আছে। এ ছাড়া ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠান ও এতিমদের আহার হিসেবে ৪১৫ মেট্রিক টন চালও রয়েছে। প্রয়োজনে বরাদ্দ করা চালও বিতরণ করা যাবে। স্বপ্নযাত্রার ১৭টি অ্যাম্বুলেন্সসহ সরকারি-বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সগুলো প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ে হটলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

মজুচৌধুরীর হাট লঞ্চ ও ফেরিঘাট থেকে নৌযান চলাচল বন্ধে শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নদী উত্তাল থাকা অবস্থায় যেন নৌযান চলাচল না করে তা তদারকি করা হবে।

ডিসি আরও জানান, ইউএনও, জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থা কমিটির সভা হয়েছে। মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনতে প্রশাসনসহ সিপিপি ও রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকরা প্রস্তুত রয়েছে। নিরাপদ আশ্রয়ে সরে আসতে ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান জানিয়ে উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।

রামগতির চরগজারিয়া ও চর আব্দুল্লাহ নদী বেষ্টিত চর। সেখান থেকে লোকজনকে সরিয়ে আনতে ইউএনও ও স্থানীয় চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের পাশাপাশি তিন হাজার ২৮০ জন সিপিপি ও ৪৫০ জন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন।

সভায় জেলা সিভিল সার্জন আহম্মদ কবীর বলেন, ‘পূজা উপলক্ষে কয়েকজন চিকিৎসক ছুটিতে বাড়িতে গেছেন। তাঁদের ম্যাসেজ দিয়ে রাখা হয়েছে। তাঁরা সময়মতো চলে আসবেন। এ ছাড়া পুরো জেলায় ৬৪টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে টিমগুলো অবস্থান করবে। জরুরি প্রয়োজনে হটলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। প্রয়োজনে আমার মোবাইল নম্বরে কল দেওয়া যাবে। আমাদের কাছে প্রয়োজনীয় ওষুধ মজুদ রয়েছে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাই রাফিন সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আবু বকর ছিদ্দিক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সাজিয়া পারভিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মেহের নিগার, সদরের ইউএনও আরিফুর রহমান, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ইউনুছ মিয়া, জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম পাবেল প্রমুখ।