তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না : জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে দেওয়া হবে না। জীবন দিয়ে হলেও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।’
রাজধানীর আরামবাগে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আজ শনিবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে এসব কথা বলেন মুজিবুর রহমান।
জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির বলেন, ‘আজ ২৮ অক্টোবর, সেই ঐতিহাসিক দিন। যেদিন লগি-বৈঠা নিয়ে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের হায়নার মতো পিটিয়ে হত্যা করেছিল আওয়ামী লীগ। সাপের মতো মেরেছিল। আমরা সেই ২৮ অক্টোবরের প্রতিশোধ নিতে চাই। তবে, হত্যার বদলে হত্যা নয়। আমরা কোরআন ও সুন্নাহর আইন চালু করে প্রতিশোধ নেব ইনশাআল্লাহ। আমাদের কোনো শহীদ ভাইয়ের একটি ফোটা রক্ত বৃথা যেতে দেব না।’
অভিযোগ করে মুজিবুর রহমান বলেন, ‘এই সমাবেশে আসার পথে আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। তাদের ছেড়ে দিতে হবে। আমাদের আমির ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি মিয়া গোলাম পরওয়ার, রফিকুল ইসলাম খান, মতিউর রহমান আকন্দসহ দলীয় ও রাজবন্দি সকল নেতাকর্মীর মুক্তি দিতে হবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী অবশ্যই নির্বাচনে যাবে। তবে, তা কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে। কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নয়।’
তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী একটি সুশৃঙ্খল গণতান্ত্রিক দল। আমরা অনেক লড়াই-সংগ্রাম করেছি। আমরা আওয়ামী লীগ-বিএনপির সঙ্গে আন্দোলন করেছি স্বৈরাচারী এরশাদের বিরুদ্ধে। আমরা কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংগ্রাম করেছি। অথচ, আজ আওয়ামী লীগের সুর ভিন্ন। আওয়ামী লীগ না কি স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি? তাদের সঙ্গে থাকলে স্বাধীনতার পক্ষের, বিপক্ষে গেলে যুদ্ধাপরাধী। এটা মুনাফেকি।’
জামায়াতে ইসলামীর এই কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির বলেন, ‘আমরা অনেক নির্বাচনেই অংশ নিয়েছি। আমরা নির্বাচন বয়কট করেছি ২০১৪ ও ২০১৮ সালে। আমরা গণতান্ত্রিক। কিন্তু, আমরা কোনো ভোট, ব্যালট ডাকাতির ভোটের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না। আমরা নির্বাচন করব, কিন্তু দলীয় সরকারের অধীনে নয়। দলীয় সরকারের অধীনে যে নির্বাচন বৈধ হয় না সেটা ২০১৪ ও ২০১৮ সালে প্রমাণ হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির শামসুল ইসলাম বলেন, ‘ভোটবিহীন সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় আছে। আজকে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। জনগণের অধিকার আদায় করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতে ইসলামীর আমির নুরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে মহাসমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক সংসদ সদস্য এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান পলাশ প্রমুখ।