নওগাঁয় কলেজছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার, বাবা-ছেলে গ্রেপ্তার

Looks like you've blocked notifications!
নওগাঁয় কলেজছাত্রী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আলাউদ্দিন আলী (বামে) ও তার ছেলে নাঈম হোসেন। ছবি : এনটিভি

নওগাঁ সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের তুলশীগঙ্গা নদীর বেড়িবাঁধের পাশ থেকে গত মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে তাবাসসুম আক্তার রিংকু (২২) নামের এক কলেজছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন দুজন। সম্পর্কে তারা বাবা-ছেলে।

নিহত তাবাসুম আক্তার রিংকু জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালি ইউনিয়নের পুন্ডুরিয়া গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে। তিনি স্থানীয় রায়কালী টেকনিক্যাল বিএম কলেজের এইচএসসি ভোকেশনাল ব্যাচের ছাত্রী ছিলেন।

এ ঘটনার পর দিন দুপুরে নিহতের মা শাহিনা বেগম বাদি হয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনার চার দিন পর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার মাটিয়াকুরি গ্রামের নাঈম হোসেন ও তার বাবা আলাউদ্দিন আলীকে গ্রেপ্তার করে।

গতকাল শনিবার (২ ডিসেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান। এর আগে গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

নওগাঁর প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামিদের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি থেকে জানা যায়, নিহত তাবাসুম আক্তার রিংকু ও নাঈম হোসেনের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এই সম্পর্ক পরিবারে বাধা হয়ে দাঁড়ালে গত ২৭ নভেম্বর সকালে এই তারা কোর্টে বিয়ের জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে একটি অটো রিকশায় করে রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা হয়। 

নওগাঁর কোর্টে অথবা রাজশাহীতে কোর্ট ম্যারেজ করা নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক আর ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে সদর উপজেলার চকগৌড়ি মেইন রাস্তায় অটোরিকশা থেকে তাবাসুম আক্তার রিংকু পড়ে যায়। মাথা ও হাত-পায়ে গুরুতর জখম হলে তাকে বাঁচানোর জন্য তার প্রেমিক নাঈম হোসেন তাকে দ্রুত মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা খারাপ দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। নাঈম হোসেন এতে ভয় পেয়ে তার বাবা আলাউদ্দিনের সঙ্গে আলোচনা করলে তিনি রিংকুকে রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন।

এরপর নাঈম হোসেন দ্রুত একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে  রিংকুকে রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর নাঈম হোসেন ও তার বাবা আলাউদ্দিন ভয় পেয়ে তাবাসুম আক্তার রিংকুর মরদেহ রাতের আঁধারে নওগাঁ সদর উপজেলার প্রত্যন্ত পল্লী তিলকপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের তুলশীগঙ্গা নদীর বেড়িবাঁধের পাশে ফেলে পালিয়ে যান।

নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান বলেন, ‘এ ঘটনায় দুই জায়গায় অভিযান চালিয়ে বাবা ও ছেলেকে আটক করা হয়েছে। তারা প্রথম শ্রেণির ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল শনিবার বিকেলে জবানবন্দি রেকর্ড করার পর আদালতের মাধ্যমে তাদের নওগাঁ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’