তফসিল স্থগিত চাওয়া রিটের শুনানি সোমবার পর্যন্ত মুলতবি
সংসদ ভেঙে না দিয়ে আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের দিন ঠিক করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিটের শুনানি আগামীকাল সোমবার (৪ ডিসেম্বর) পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেছেন হাইকোর্ট।
আজ রোববার (৩ ডিসেম্বর) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চে এ দিন ধার্য করেন।
শুনানির প্রথম দিনে রিটকারী আইনজীবীকে আদালত প্রশ্ন করেন, আপনি কেন নির্বাচন নিয়ে সংক্ষুব্ধ হলেন। তখন আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ বলেন, আমি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। আমরা শপথ নিয়েছি। জনস্বার্থে অনেক মামলা করে রায়ও পেয়েছি। আদালত বলেন, রিটে আপনি কী চেয়েছেন?
আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ বলেন, তফসিল স্থগিত চেয়েছি। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠানের আরও পাঁচ মাস সময় রয়েছে। অথচ তড়িঘড়ি করে নির্বাচন করতে চাইছে কমিশন। অনেক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। এ অবস্থায় নির্বাচন প্রিম্যাচিউরড। সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে নির্বাচন করতে হলে সংসদ ভেঙে দিতে হবে, মন্ত্রিসভা ছোট করতে হবে। এসব কিছুই করা হয়নি। হাইকোর্ট বলেন, নির্বাচন কমিশনের সংবিধানের মধ্যে থেকে তাদের সুবিধামতো সময়ে নির্বাচন দেওয়ার এখতিয়ার রয়েছে। আর এক সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে তো ২০১৮ সালে সেটেল হয়ে গেছে।
শুনানির একপর্যায়ে সংবিধানের ১২৩(৪) অনুচ্ছেদে দুর্যোগ-দুর্বিপাকের কারণে সংসদের মেয়াদ শেষে নির্বাচন প্রসঙ্গ এলে আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ বলেন, সব কিছু তো আল্লাহর হুকুমে হয়। তখন হাইকোর্ট বলেন, পাঁচ মাস আগে যে নির্বাচন সেটাও তো আল্লাহর হুকুমেই হচ্ছে।
এরপর শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, সংবিধানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।
পরে আদালত রিটকারী আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, এটা সাংবিধানিক বিষয়। সংবিধানের মধ্যে থেকে শুনানি করতে হবে। আপনি ভালো করে প্রস্তুতি নিয়ে আসুন। আগামীকাল (সোমবার) আবারও এ বিষয়ে শুনবো।
রিটকারী আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, বর্তমানে একটি সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় আরেকটি সংসদ নির্বাচনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত বুধবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেছি। রিট আবেদনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিবসহ সাত জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
গত ২৯ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দাখিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ। এর আগে মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) এই আইনজীবী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪ পেছানোর দাবি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন পেছানোর সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করা হয়েছে লিগ্যাল নোটিশে। ভোটগ্রহণের ৫২ দিন আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গত ১৫ নভেম্বর ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ভোট হবে আগামী ৭ জানুয়ারি।