গৃহকর্মী আসমার মৃত্যু, পুলিশ-জনতার সংঘর্ষে ৩ মামলা
রাজধানীর বনশ্রী এলাকায় গৃহকর্মী আসমা বেগমের মৃত্যুকে ঘিরে তিনটি মামলা হয়েছে। তার মৃত্যুর ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা ও বাসাতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আরও দুটি মামলা হয়েছে। এই মামলা দুটির একটি বাদী পুলিশ ও অপরটির বাদী বাসার মালিকের গাড়িচালক। দুটি মামলায় অজ্ঞাত এক হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ সোমবার (৩১ ডিসেম্বর) রাতে রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ওসি মশিউর বলেন, এ ঘটনায় গতকাল রোববার (৩১ ডিসেম্বর) রাতেই তিনটি মামলা হয়েছে। একটি করেছে নিহত আসমার ছেলে আজিজুল। অন্য দুটির মধ্যে একটির বাদী পুলিশের এসআই কামরুল ইসলাম ও বাসার মালিকের চালক উজ্জ্বল ভূঁইয়া। আমরা পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে গ্রেপ্তার করব। ইতোমধ্যে কয়েকজকে শনাক্তও করা হয়েছে।
রামপুরা থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অপমৃত্যু বাদে বাকি দুটির একটিতে পুলিশের কাজে বাধা, তাদের ওপর হামলা ও আহত করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া আরেকটি বাসাটির নিচের গ্যারেজে আগুন দিয়ে তিন প্রাইভেটকার ও একটি মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দিয়ে ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ এনেছেন বাদী উজ্জ্বল।
বাসার মালিক দেলোয়ার হোসেন একজন সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা। তিনি বর্তমানে একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে কর্মরত আছেন। তার দুই মেয়ে ও দুই ছেলে। তার মধ্যে তুবা নামের এক মেয়ের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতেন আসমা। মালিক দেলোয়ারের দাবি, আসমা মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন।
গতকাল রোববার সকালে বনশ্রী এলাকার ডি ব্লকের চার নম্বর সড়কের ৩২ নম্বর বাসার সামনে আসমা বেগম (৪৫) নামে এক গৃহকর্মীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন এলাকাবাসী। পরে সেখানে পুলিশ গেলে উত্তেজিত জনতা তাদের ওপর হামলা চালায়। তাদের তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে রিজার্ভ পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। ততক্ষণে বাসার নিচে থাকা গ্যারেজে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। আগুনে গ্যারেজের নিচে থাকা তিনটি প্রাইভেটকার ও একটি মোটরসাইকেল পুড়ে যায়। এ ছাড়া বাসাটির দ্বিতীয় তলার এক নারী ও শিশু আহত হন। কিন্তু পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে থাকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে।
দুপুর ১২টা পর্যন্ত উত্তেজিত জনতার সঙ্গে দফায় দফায় চলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করতে টিয়ারসেল ছুঁড়তে বাধ্য হয়। পরে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। এরপর গৃহকর্মী আসমার মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনায় বাদী হয়ে নিহতের ছেলে আজিজুল একটি অপমৃত্যু মামলা করেন। যদিও শুরু থেকে অভিযোগ ওঠে, আসমাকে হত্যার পর ছাদ থেকে বাসার নিচে ফেলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, এই অভিযোগের এখনও কোনো সত্যতা পায়নি পুলিশ।