সুনামগঞ্জে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধসহ আহত শতাধিক
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় মহিলাসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। এরমধ্যে ৩০ জনেরও বেশি গুলিবিদ্ধ রয়েছে। এদের বেশিরভাগই পুলিশের রাবার বুলেটে আহত হয়েছে।
আজ বুধবার (১০ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় দোয়ারাবাজার উপজেলা সদরের পাশের গ্রাম পূর্ব মাছিমপুর ও নৈনগাঁও গ্রামবাসীর মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ফের সংঘর্ষের আশঙ্কায় ওই দুই গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে দোয়ারাবাজার উপজেলা সদরের পাশের গ্রাম পূর্ব মাছিমপুর ও পশ্চিম মাছিমপুরবাসীর নৌকা ও ঈগল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষের জেরে গত দুই দিন ধরে উপজেলা সদরে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। গতকাল মঙ্গলবার রাতে পূর্ব মাছিমপুরের আমরু মিয়ার ছেলে ঈগল প্রতীকের সমর্থক শামীম আহমদের সঙ্গে পাশের নৈনগাঁও গ্রামের নৌকার সমর্থক আবুল হোসেনের কথা কাটাকাটি হয়। এরই জের ধরে আবুল হোসেনের সমর্থকরা শামীম আহমদের পূর্ব মাছিমপুরের বাড়িতে ইটপাটকেল ছুড়ে। পুলিশ রাতে পরিস্থিতি শান্ত করে দুই পক্ষকে সরিয়ে দেয়। আজ সকালে আবুল হোসেনের দোয়ারা বাজারের বাসভবনে এসে শামীম আহমদের লোকজন হামলা করে। এই ঘটনার খবর নৈনগাঁও গ্রামে পৌঁছালে আবুল হোসেনের পক্ষের নৈনগাঁও গ্রামবাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে উপজেলা সদরে এসে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষ একপর্যায়ে নৈনগাঁও ও পূর্ব মাছিমপুর গ্রামবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ রাবার বুলেট ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা।
আহতদের মধ্যে আবুল মিয়া (৩৬), আশিক মিয়া (৪২), মাসুদ রানা (২৫), জাবেদ আহমদ (২৩), গিয়াস উদ্দিনকে (৩০) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।
আশিক মিয়া দৈনিক আমাদের সময়ের উপজেলা প্রতিনিধি, মাসুদ রানা দৈনিক সংগ্রামের উপজেলা প্রতিনিধি। মাসুদ রানার অভিযোগ, তিনি ভিডিও ধারণের সময় পুলিশ তাঁদের লাঠি দিয়ে আঘাত করে এবং মোবাইলফোন ভেঙে ফেলে। আশিক মিয়া আওয়ামী লীগনেতা আবদুল খালেকের ছোট ভাই।
আশিক মিয়া বলেন, আমার ভাতিজা আবুল মিয়াকে হামলার পর তাঁকে রক্ষা করতে গিয়ে আমি হামলার শিকার হয়েছি। এ সময় প্রতিপক্ষের একজনের হাতে পিস্তল ছিল।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ জানান, নির্বাচনী সহিংসতার জেরে আজ দুই গ্রামবাসী সংঘর্ষে জড়ায়। পুলিশ সংঘর্ষ থামাতে রাবার বুলেট ছুড়েছে। কত রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়া হয়েছে হিসেব করা হয়নি। গ্রেপ্তার অভিযান চলছে। কয়েকজন গ্রেপ্তারও হয়েছে। তবে কতজন গ্রেপ্তার হয়েছে পরে জানানো যাবে।