নওগাঁয় পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত

Looks like you've blocked notifications!
নওগাঁয় পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ছবি : এনটিভি

উদ্বৃত্ত ধান-চাল উৎপাদনের জেলা এবং দেশের অন্যতম বৃহৎ চালের মোকাম নওগাঁয় পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নওগাঁর পাইকারি বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা ও চিকন চালের কেজি প্রতি তিন থেকে চার টাকা এবং খুচরা বাজারে কেজি প্রতি চার থেকে ছয় টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

নওগাঁর পাইকারি ধান-চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারগুলোতে ধানের আমদানি কম, ধানের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে চালের বাজারে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ভাবিয়ে তুলেছে সাধারণ খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষদের।

পৌর খুচরা বাজারে চাল কিনতে আসা শহরের হাট নওগাঁ মহল্লার বাসিন্দা সুজন হোসেন সরদার ও কালিতলা মহল্লার মৃত্যুঞ্জয় সরকার বলেন, চালের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে কেজি প্রতি চার-পাঁচ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমারা যারা নিম্ন আয়ের মানুষ, দিন আনি দিন খাই। আমাদের পক্ষে বেশি দামে চাল কেনা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। চালের দাম কমানো এবং স্থিতিশীল রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এসব নিম্ন আয়ের মানুষ।

খুচরা চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক উত্তম সরকার বলেন, স্বর্ণা-৫. গুটি স্বর্ণা, বিআর-২৮, কাটারিভোগ, সম্পা কাটারি, নাজিরশাইল, মিনিকেট থেকে শুরু করে সব ধরনের চালের দাম খুচরা বাজারে কেজিতে প্রকার ভেদে চার থেকে ছয় টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। হঠাৎ করে সপ্তাহের ব্যবধানে চালের এই মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে বাজারে ধানের অপ্রতুলতা, ধানের দাম বৃদ্ধিকেই দায়ী করেছেন তিনি।

নওগাঁ ধান্য-চাউল আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিরোদ বরণ সাহা চন্দন বলেন, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে নওগাঁর পাইকারি বাজারে মোট চাল দুই থেকে তিন টাকা, মাঝারি সরু চাল আড়াই থেকে তিন টাকা এবং সরু চাল তিন থেকে চার টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই মুহূর্তে চালের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে দুই থেকে চার টাকা কেজি প্রতি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, কৃষকরা ধান কাটার পরই তা বিক্রি করায় এখন কৃষকের গোলায় ধান নেই। একই সঙ্গে ধানের বাজারে আমদানি সংকট দেখা দেওয়ায় হঠাৎ করে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, নওগাঁর মধুইল বাজারে যেখানে প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ গাড়ি ধান কেনা বেচা হতো সেখানে বর্তমানে দিনে সাত থেকে আট গাড়ি ধান বাজারে পাওয়া দুস্কর হয়ে পড়েছে। আর গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ধানের বাজারে ধানের দাম মণ প্রতি প্রায় ১৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে ধান থেকে চাল উৎপাদন করতে গেলে উৎপাদন খরচ বাড়ছে আর এসব কারণে চালের বাজার একটু ঊর্ধ্বমুখী।

বাজার স্থিতিশীল হওয়ার কোনো সম্ভাবনা বা এ অবস্থা থেকে উত্তরণের কোনো উপায় আছে কি না জানতে চাওয়া হলে নিরোদ বরণ সাহা চন্দন বলেন, প্রতি বছর এই সময়ে চালের দাম একটু বাড়তির দিকেই থাকে। রোপা-আমন ধান উঠার পর আর ইরি-বোরোর ধান বাজারে আসার আগে মাঝখানের এই সময়ে ধান সংকটের কারণে চালের বাজারের ঊর্ধ্বগতি থাকেই। এটাকে আমরা ব্যবসায়ীরা অস্বাভাবিক কিছু মনে করছি না। তবে, চালের দাম দুই মাস পরে আরও বাড়তে পারে বলে তিনি জানান।

নিরোদ বরণ সাহা চন্দন আরও বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে ইরির বীজতলা নষ্ট হয়ে যেতে পারে এবং বীজতলা নষ্ট হলে ইরি মৌসুমের ধান উৎপাদনের উপর এর একটা প্রভাব পড়তে পারে।