বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ভারত-রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা

Looks like you've blocked notifications!
ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা ও রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মান্টিটস্কি আজ বৃহস্পতিবার বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা ও রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মান্টিটস্কি বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সচিবালয়ে প্রতিমন্ত্রীর নিজ অফিস কক্ষে ভারতের হাইকমিশনার ও রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত পৃথক পৃথক সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতে দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকারের নিকট নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের একটি তালিকা প্রদান করবে। বিশেষ করে পিঁয়াজ, চিনি, আদা-রসুন ইত্যাদি, যেন জরুরি মুহূর্তে আমদানি করা সম্ভব হয়। এটি নিশ্চিতের জন্য একটি সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরের ওপর গুরুত্বাপরোপ করে তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। ভারত যেকোনো সংকটে বাংলাদেশের পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতে থাকবে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের মধ্যকার আমদানি-রপ্তানি পরিসংখ্যান তুলে ধরে আহসানুল ইসলাম টিটু ভারত সরকারকে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পণ্য আমদানি করার আহ্বান জানান। বিশেষ করে ভারতের সেভেন সিস্টার্সের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করে বাংলাদেশি পণ্য আমদানি, যেমন—হস্তশিল্প, ইলেক্ট্রনিকস, পাটজাত ও চামড়াজাত পণ্য এবং খাদ্যপণ্য প্রবেশের সুযোগ তৈরির অনুরোধ জানান। 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, উভয় দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য বর্ডার হাটগুলোকে আরও সক্রিয় করতে হবে। এ সময় মৌলভীবাজারে একটি বর্ডার হাট উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে জানালে ভারতীয় হাইকমিশনার যৌথভাবে উদ্বোধন করতে সম্মত হন। এ ছাড়া নতুন করে বর্ডার হাট চালুর লক্ষ্যে সাম্ভাব্য স্থানসমূহ চিহ্নিত করতে একসেঙ্গ কাজ করারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

ভারতীয় হাইকমিশনার জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যেকার ব্যবসাবাণিজ্য সম্প্রসারণের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, আগামী মাসে দেশটিতে একটি মেগা শো হবে, যেখানে বাংলাদেশি প্রতিনিধিদের অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানান। উভয় দেশের পণ্য বহুমূখীকরণের মাধ্যমে রপ্তানি বৃদ্ধি করতে ভারতে বেস্ট অব বাংলাদেশ প্রোডাক্ট এবং বাংলাদেশে বেস্ট অব ইন্ডিয়া প্রোডাক্ট শো আয়োজনের পরামর্শও দেন প্রণয় ভার্মা। বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রস্তাবের সঙ্গে একমত পোষণ করে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। 

পরে, রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের সময় আহসানুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ-রাশিয়ার সম্পর্ক ঐতিহাসিক। সময়ের ব্যবধানে এই সম্পর্ক নতুন মাত্রা লাভ করেছে। উভয় দেশের সম্পর্ক বিশেষ করে ব্যবসাবাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে রাশিয়া সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। 

রাশিয়া বাংলাদেশ থেকে আমদানির চেয়ে রপ্তানি বেশি করে থাকে উল্লেখ করে এই ব্যবধান কমানোর জন্য বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পণ্য রাশিয়াতে আমদানির আহ্বান জানালে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ফার্মাসিউটিক্যালস, পাট ও চামড়াজাত পণ্য, সিরামিকস, খাদ্যপণ্য ইত্যাদি আমদানির প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। উভয় দেশের মধ্যে কৌশলগত বাণিজ্যিক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য রাশিয়াতে বাংলাদেশি পণ্যের মধ্যে বিশেষ করে হস্তশিল্পের প্রদর্শনীর আয়োজন করার আহ্বান জানালে রাষ্ট্রদূত মস্কোতে প্রদর্শনী আয়োজনে সবধরনের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন। 

আহসানুল ইসলাম টিটু বাংলাদেশ ও রাশিয়ার আমদানি-রপ্তানিতে সরাসরি বিনিময় ব্যবস্থা চালু করতে বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করার আহ্বান জানান। এ সময় রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে রাশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা স্থাপনের আগ্রহ প্রকাশ করলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সহযোগিতার আশ্বাস দেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী।