মিয়ানমার সীমান্তে সীমান্তরক্ষীরা সতর্ক রয়েছেন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলে রোহিঙ্গা মুসলিম অধ্যুষিত রাখাইনের কিয়াকতাউ শহরে প্রচণ্ড লড়াই চলছে। চলমান সেই উত্তেজনার প্রেক্ষিতে দেশের অবস্থান প্রশ্নে কথা বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, এই উত্তেজক পরিস্থিতি কিছু দিন ধরেই চলছে। আমাদের সীমান্তরক্ষীরা অনেক আগে থেকেই সতর্ক অবস্থানে আছেন। রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেছেন, আমাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে—মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র স্থায়ী সমাধান। তারাও আমাদের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। কিছুদিন আগে ন্যাম সামিটে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সঙ্গে এ বিষয়ে যে আলোচনা হয়েছিল, সেটিও আজ শনিবার বৈঠকে আমাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা এ বিষয়ে সবসময়ই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা চেয়েছি। আমরা মনে করি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে যদি মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়, তাহলে তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বাধ্য হবে।
নতুন করে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করা হবে কি না—প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গার কারণে ইতোমধ্যেই আমরা ভারাক্রান্ত। প্রতিবছর ৩৫ হাজার করে রোহিঙ্গা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। মানবিক কারণে তখন আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিলাম। আমরা মনে করি, মিয়ানমারের পরিস্থিতি উন্নয়নের মাধ্যমে এই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
যুক্তরাজ্যের হাউজ অব কমন্সের ‘অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ অন বাংলাদেশ'র ভাইস-চেয়ার লেবার পার্টির এমপি বীরেন্দ্র শর্মার নেতৃত্বে চারজন এমপিসহ আট সদস্যের প্রতিনিধি দল আজ শনিবার (২৭ জানুয়ারি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সাক্ষাৎ করেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে গাজায় গণহত্যা বন্ধে আইসেজের রায় নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। একইসঙ্গে মিয়ানমারে ছড়িয়ে পড়া লড়াইয়ের বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান জানান।
গাজা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) শুক্রবার ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যা বন্ধে যে রায় দিয়েছে, সেটাকে আমরা স্বাগত জানাই। তিনি বলেন, এ রায়কে আমরা ইতিমধ্যে সমর্থন জানিয়েছি। আমরা মনে করি, ফিলিস্তিনে যে গণহত্যা হচ্ছে, মানবতার বিরুদ্ধে যে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, সেটি বন্ধ করার ক্ষেত্রে এ রায় সহায়ক হবে। ভবিষ্যতেও বাংলাদেশ এ বিষয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতি কূটনৈতিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। আমরা আশা করি, ইসরায়েল আইসিজের রায় মেনে চলবে এবং গণহত্যা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।