দেশকে ঋণের ফাঁদে ডুবিয়ে দিয়েছে সরকার : রিজভী

Looks like you've blocked notifications!
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আজ সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মলেনে কথা বলেন। ছবি : এনটিভি

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশের সমগ্র অর্থনীতিকে ভয়াবহ এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে ক্ষমতাসীন সরকার। গণতন্ত্রহীনতা, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি, বিদেশে অর্থপাচার, মূল্যস্ফীতি, নিম্নমুখী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, চলতি হিসাবের ঘাটতি, রাজস্ব ঘাটতি এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার নজিরবিহীন দরপতনে জনগণ আতঙ্কিত। সরকার দেশকে ঋণের ফাঁদে ডুবিয়ে দিয়েছে।

আজ সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মলেনে রিজভী এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘বর্তমানে দেশের অর্থনীতির প্রতিটি প্রধান সূচকের অবস্থান এতটাই শোচনীয়, যা দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিকে এক মহাবিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। দেশকে ঋণের ফাঁদে ডুবিয়ে দিয়েছে সরকার। অভ্যন্তরীণ ঋণ শোধ করতে ট্যাক্স-ভ্যাট-কর খাজনার পরিধি বাড়িয়ে জনগণের গলায় গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করার অবস্থায় নেওয়া হয়েছে।’

রিজভী বলেন, ‘বর্তমানে দেশি-বিদেশি ঋণের পরিমাণ বাংলাদেশের দুটি অর্থ বছরের বাজেটেরও বেশি। যে শিশু ভূমিষ্ঠ হচ্ছে আজ তার মাথায়ও প্রায় লাখ টাকার বেশি ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। ঋণের টাকায় কানাডার বেগমপাড়া, আমেরিকায় বিলাস বহুল বাড়ি-গাড়ি-ব্যবসা, দুবাই সিঙ্গাপুরে বিনিয়োগ, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোমসহ তিন মহাদেশে সম্পদের পাহাড় গড়া হয়েছে। সুইস ব্যাংকে ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠ কার কার নতুন অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হচ্ছে সেটিও অজানা নয় অনেকের কাছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণে বাংলাদেশের সীমান্ত অরক্ষিত।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘৭ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনকে আমেরিকা স্বাগত জানায়নি বা স্বীকৃতি দেয়নি। তারা বার বার পরিষ্কার করে বলেছে ৭ জানুয়ারির নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি। তারা সরকার টু সরকার বা জনগণের সাথে কাজ করতে চায়। রাশিয়া বা চীনের সাথেও আমেরিকা কাজ করছে।’

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্মমহাসচিব বলেন, ‘ডামি সরকার নিজেদের মধ্যে ক্ষমতার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও দেশের অধিকাংশ মানুষের দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে। দেশে এই মুহূর্তে মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্য দুটোই সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। অপরদিকে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘার মতো জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ সংকটের কারণে বিপর্যস্ত দেশের কৃষি ও শিল্পখাত। বোরো আবাদের এই ভরা মৌসুমে বিদ্যুৎ সংকটের কারণে কৃষকরা চরম হতাশার মধ্যে পড়েছে। ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুৎ দেওয়ার কথা বলে কুইক রেন্টালের নামে রাষ্ট্রের এক লাখ কোটি টাকার বেশি লোপাট করলেও এখন দেখা যায়, সবই ফাঁকি। সবই ছিল লুটপাট আর টাকা পাচারের ফন্দি।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, অধ্যাপক ডা. আবদুল কুদ্দুছ, শিশু বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, তারিকুল আলম তেনজিং, শাহ নেছারুল হক, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম প্রমুখ।