আর কোনো রোহিঙ্গাকে ঢুকতে দেওয়া হবে না : বিজিবি মহাপরিচালক
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেছেন, আমরা কোনো রোহিঙ্গাকে আর ভেতরে ঢুকতে দেব না। এভাবে আমরা দেশের অখণ্ডতা বজায় রেখে সরকারপ্রধানের নির্দেশনায় কাজ করে যাচ্ছি। পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে আছে উল্লেখ করে আশ্রয় নেওয়াদের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তাদের প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি, এটি খুব শিগগিরই হবে।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আজ মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানান বিজিবি মহাপরিচালক।
জানা গেছে, বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তের মিয়ানমারে বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে চলছে ব্যাপক গোলাগুলি। উত্তল মিয়ানমারের প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। সেখানের গোলা মাঝেমধ্যেই ঢুকে পড়ছে ঘুমধুমে। কয়েকজন হয়েছে হতাহত। এরইমধ্যে দেশটির বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ও সেনাসদস্যসহ ২৬৪ জন আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে।
মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, ‘মিয়ানমার সীমান্ত বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দেশটির ২৬৪ বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ও সেনাসদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। আমরা ধৈর্য ধারণ করে মানবিক দিক থেকে আন্তর্জাতিক সুসম্পর্ক বজায় রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছি।’ তিনি বলেন, ‘গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী এই দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আমাদের ধৈর্য ধারণের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই ধারাবাহিকতায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
বিজিবি প্রধান বলেন, আজ ৬৫ জন রোহিঙ্গা নৌকায় করে পানিপথ দিয়ে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছে। সেখানে আমাদের টেকনাফ বিজিবি তাদের প্রতিহত করে পুশব্যাক করার কার্যক্রম চলমান আছে। আমরা কোনো রোহিঙ্গাকে আর ঢুকতে দেব না। এভাবে আমরা দেশের অখণ্ডতা বজায় রেখে সরকারপ্রধানের নির্দেশনায় কাজ করে যাচ্ছি এবং পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে।
বিজিবি প্রধান আরও বলেন, ‘গতকাল সোমবার রাত পর্যন্ত ১১৫ জন বিজিপি, সেনা সদস্য এবং অন্যান্য সদস্য আত্মসমর্পণ করে আমাদের কাছে আশ্রয় নিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে আরও ১১৪ জন যোগ হয়েছেন। পরবর্তী সময়ে আজ দুপুরের মধ্যে আরও ৩৫ জন যোগ হয়ে বর্তমানে ২৬৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এই ২৬৪ জনকে আমরা আশ্রয় দিয়েছি। তাদের খাবারেরও ব্যবস্থা করেছি। এদের মধ্যে আহত ১৫ জন ছিল। তারমধ্যে আটজন গুরুতর আহত ছিল।’
মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, ‘বিজিবির ব্যবস্থাপনায় এদের (আশ্রয় নেওয়াদের) চারজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আর চারজনকে চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে তাদের জীবন রক্ষার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করা হয়েছে। আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তাদের প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি, এটি খুব শিগগিরই হবে।’