মিয়ানমারের ইস্যুতে জাতিসংঘে চিঠি দেবে সরকার : ওবায়দুল কাদের

Looks like you've blocked notifications!

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘর্ষের জেরে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে সরকার জাতিসংঘে চিঠি দেবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে অবস্থিত দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন সেতুমন্ত্রী।

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সীমান্ত উদারভাবে খুলে দেবে সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে উদ্বেগের বিষয় জাতিসংঘকে জানানো হবে। রাখাইনে দেশটির সেনা ও বিদ্রোহীদের মধ্যে যুদ্ধের কারণে সীমান্তের এপারে কয়েকদিন ধরে আতঙ্ক চলছে। ঘুমধুম ও পালংখালী সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমারের ছোড়া গুলি ও মর্টারশেলে গত মঙ্গলবারও অন্তত পাঁচজনের আহত হয়েছেন। অনেকের বাড়িঘরে এসে গুলি পড়েছে। এর আগে মিয়ানমার থেকে উড়ে আসা মর্টারের গোলার আঘাতে এক বাংলাদেশি ও এক রোহিঙ্গা নাগরিক মারাও গেছেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সীমান্ত লাগোয়া গ্রামের বাসিন্দারা জীবন বাঁচাতে বাড়িঘর ছেড়ে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি ও সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠেন। কয়েকদিনের যুদ্ধের মধ্যে সাহস করেও যারা ভিটেমাটিতে ছিলেন তারাও বাড়ি ছেড়ে যান। গত মঙ্গলবার ও বুধবার সকাল হতে ঘুমধুম সীমান্ত এলাকা অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসে। গোলাগুলির তেমন কোনো শব্দ শোনা যায়নি। এর ফলে অনেকে নিজেদের বাড়িতে ফিরে আসেন। বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক আছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানালেও আতঙ্ক যাচ্ছে না সীমান্ত এলাকার মানুষের। এমন অবস্থায় সরকার সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘকে চিঠি দিয়ে জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মিয়ানমারে চলমান সংঘাত ভারতে কোনো প্রভাব ফেলছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এই রেশ ভারতেও গেছে। ভারতীয় সীমান্ত দিয়েও মিয়ানমারের বেশ কিছু লোকের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। ওদের সীমান্তরক্ষীও গেছে। ভারত যে মাথা ঘামাচ্ছে না, তা নয়। ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালও আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে গেছেন। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতে আছেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শংকর এবং নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল তাদের সঙ্গে এর মধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ আলাপ আলোচনা করেছেন। এই আলোচনার মধ্যে মিয়ানমার ইস্যুটা গুরুত্ব পেয়েছে। বিএনপি রোহিঙ্গাদের প্রথম আসতে দেয় জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যখন তারা ক্ষমতায় ছিল তারা যে সুযোগ দিয়েছিল, সেটা কি তারা ভুলে গেছে? আমাদের নেত্রী যা করেছেন জাতিসংঘসহ সারা পৃথিবী তার প্রশংসা করেছে। তখনকার বাস্তব অবস্থার প্রেক্ষিতে মানবিকতার জন্য সীমান্ত খুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেজন্য তাকে মানবতার মা বলা হয়।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির মাথা খারাপ হয়ে গেছে। আমেরিকা, ঋষি সুনাক একসঙ্গে কাজ করার কথা বলেছেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বার্তা দিয়েছিলেন একসঙ্গে কাজ করার। এখন তো তাদের সব আশা শেষ। তারা ভেবেছিলেন বিদেশি বন্ধু তাদের পাশে এসে দাঁড়াবে। সে আশা একেবারেই শেষ হয়ে গেছে। আটলান্টিক ওপার থেকেও কোন বার্তা আসেনি, আবার এইদিক থেকেও কোন বার্তা আসেনি বা আসার কারণও নেই।’

সরকার দুর্বল ও জনমত না থাকায় মিয়ানমারের বিপক্ষে কোনো লিখিত প্রতিবাদ জানাতে পারেনি যে দাবি করেছে বিএনপি, তার জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, তারা পাগলের প্রলাপ বকছে। এদের মাথা ঠিক নেই। দেখে চারদিক থেকে প্রশংসা। শেখ হাসিনার সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করবে। তারা বলছে, আরে এটা তো হবার কথা না, এটা কীভাবে হবে। আরও অনেক কিছুই হবে। তারা শুধু চেয়ে চেয়ে দেখবে। চেয়ে চেয়ে চোখের পানি ফেলবে।