অটোরিকশা বাংলার টেসলা : বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। ফাইল ছবি

অটোরিকশাকে বাংলার টেসলা বললেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। আজ বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ এ কথা বলেন। 

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, থ্রি হুইলার (অটোরিকশা) চালাচ্ছে ৪০ লাখ। আমি এদেরকে বলি বাংলার টেসলা। তারা নিজের হাতে তৈরি করেছেন এবং আমাদের উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে করছেন। তাই আমরা তাদেরকে বাধা দিচ্ছি না। তবে হ্যাঁ যান্ত্রিকভাবে ত্রুটি থাকতে পারে, সেটার রিটার্ন অনেক বেশি।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা সকল ইলেকট্রনিক ভেহিকেলকে বলি ইভি ভেহিকেল। সারা বিশ্বে এখন প্রতিযোগিতা চলছে কত দ্রুত একটা ট্রান্সপোর্ট ভেহিকেলকে ইভি ভেহিকেলে নিয়ে যাওয়া যায়। এতে সুবিধা দুটি, আমরা যারা তেল দিয়ে গাড়ি চালাই সেটা ডিজেল হোক আর পেট্রোল হোক। তেল দিয়ে যে গাড়ির ইঞ্জিন ঘুরে তার শক্তির সঞ্চয়ের দক্ষতা হলো ২০ ভাগ। অপরদিকে ইলেকট্রনিক দিয়ে যে শক্তির সঞ্চয় হয় তার দক্ষতা হলো ৮০ ভাগ। মূলত আমরা এনকারেজ করি ইলেকট্রনিক ভেহিকেলগুলো বাজারে আসুক। এতে যেই এক কিলোমিটার তেলের যে যানবাহন আছে যদি ১০০ টাকা লাগে আর যদি ইলেক্ট্রনিক দিয়ে চলে তার খরচ হবে ২০ টাকা।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশে ৪০ লাখের ওপরে থ্রি হুইলার আছে। তারা লেদ ব্যাটারি ব্যবহার করে। লেদ ব্যাটারি গুলো চার্জ হতে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা সময় বেশি লাগে। এই ব্যাটারিগুলো যদি লিথিয়াম ব্যাটারি হয় তাহলে আধাঘণ্টার মধ্যে চার্জ হয়ে যাবে। ইলেকট্রনিক ভেহিকেলের চার্জিং স্টেশন প্রধানমন্ত্রী ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছে। আমরাও সব কয়টি ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিকে বলেছি। এখন যদি যে কেউ ওয়েবসাইটের নীতিমালা অনুযায়ী চার্জিং স্টেশন বসাতে চায় তারা আবেদন করে বসাতে পারে, যদি আপনার গাড়ি ইলেকট্রনিক ও থ্রি হু্‌ইলার হয়। 

নসরুল হামিদ বলেন, এছাড়া আপনি (শামীম ওসমান) যে কথা বলছেন এই থ্রি হুইলার চালাছে ৪০ লাখ লোক। আমি এদেরকে বলি বাংলার টেসলা। নিজের হাতে তৈরি করেছেন এবং আমাদের উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে করছেন আমরা তাদেরকে বাধা দিচ্ছি না। তবে হ্যাঁ যান্ত্রিকভাবে ত্রুটি থাকতে পারে, সেটার রিটার্ন অনেক বেশি। 

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এই ৪০ লাখ রিকশাচালক যারা ইলেক্ট্রিসিটি ব্যবহার করছে, তারা অবশ্যই আয় করছে। এবং আমরা চাচ্ছি লেদ ব্যাটারি থেকে যেন লিথিয়াম ব্যাটারিতে চলে আসে। এ বিষয়ে আমরা প্রকল্প করছি। অচিরেই পাইলট প্রজেক্ট করবো। যেটাকে ব্যাটারি সোয়াপিং বলে বিদেশে। অর্থাৎ লেদ ব্যাটারি দিয়ে লিথিয়াম ব্যাটারি দেওয়া যাতে চার্জিংটা দ্রুত হয়। বাংলাদেশে যত পাবলিক ইউটিলিটি বাস আছে দ্রুততার সাথে এগুলো ইলেক্ট্রটিক বাসে নিয়ে আসা উচিত। খরচ কম ও দ্রুততার সাথে পরিবেশ বান্ধব। ট্রান্সপোর্ট সেক্টর প্রায় ১৮ ভাগ কার্বননিসর্গ করে এগুলোর কারণে ইলেক্ট্রটিক ভেহিকেল আসা উচিত। আপনি জানেন অনেকে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে আমি দেখেছি রাতের বেলায় গিয়ে চার্জ করে রিকশা। আমার কেরাণীগঞ্জে থেকে দেখেছি মিটার থেকে বিদ্যুৎ নেয়। আমরা ট্যারিফ ঠিক করে দিয়েছি, যারা ওই চার্জিং স্টেশন থেকে বিদ্যুৎ নিবে তাদের জন্য আলাদা ট্যারিফ আছে। আমাদের গৃহের যে ট্যারিফ তার থেকে বেশি। তারা অবৈধ বিদ্যুৎ না দিয়ে বৈধ ভাবে নিচ্ছে। 

এর আগে নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান প্রশ্নে বলেন, অটোরিকশা এবং রিকশার মধ্যে ব্যাটারি লাগানো, টু হুইলার ও থ্রি হুইলার আমার এলাকাসহ সারাদেশে চলছে। এরা যে ব্যাটারিগুলো চার্জ করে ৯৯ ভাগ চালক ও ব্যবহারকারী ৭শ থেকে ৮শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চুরি করে। এরা যে চুরি করছে এবং ৭০০-৮০০ মেগাওয়াট নিয়ে নিচ্ছে আবার এগুলো চলাও নিষিদ্ধ , এগুলো বন্ধ করার ব্যাপারে আপনি কোন বিশেষ উদ্দ্যেগ নিবেন কী না। এছাঢ়া টু হ্লইলাম, থ্রি হুইলার এমনকি রিকশার মধ্যে ব্যাটারি লাগানো হচ্ছে। যা খুবই বিপদজনক। এগুলো ব্রেক করলেও উল্টে যাচ্ছে। সে ব্যাপারে সারাদেশে একসাথে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন কী না তা সবিনয়ে জানতে চাচ্ছি।