বিভিন্ন নামে বেড়েছে কিশোরগ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য, গ্রেপ্তার ৫

Looks like you've blocked notifications!
কিশোরগ্যাংয় বিষয়ে আজ শনিবার সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন র‌্যাব-৩-এর সিও লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। ছবি : র‌্যাব-৩

নানা নামে কিশোরগ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। ত্রাস ছড়াতে তারা ব্যবহার করছে বিপুল দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি বিদেশি পিস্তলও। এমনই দুটি দল ‘দে ধাক্কা’ ও ‘ডায়মন্ড’। এই কিশোরগ্যাং চক্রের অন্যতম হোতা মো. জুলফিকার আলীসহ পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

আজ শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাব-৩-এর সিও লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। এর আগে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগরীর আদাবরের মোহাম্মদিয়া হাউজিং সোসাইটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, জুলফিকার আলী (৩৭), হারুন অর রশিদ (৩৮), শামছুদ্দিন বেপারী (৪৮), কৃষ্ণ চন্দ্র দাস (২৮) ও মো. সুরুজ মিয়া (৩৯)।

আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় বেশকিছু কিশোরগ্যাং সক্রিয় রয়েছে। তার মধ্যে জুলফিকারের নেতৃত্বে ‘ডায়মন্ড’ ও ‘দে ধাক্কা’ নামে দুটি কিশোরগ্যাং পরিচালনা করতেন। এলাকার বেশকিছু বেপরোয়া ও মাদকসেবী কিশোরদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরগ্যাং পরিচালনার মাধ্যমে এলাকায় অস্ত্র, মাদক কারবার, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অপহরণ, ডাকাতি ও ভূমি দখলসহ বিভিন্ন অপকর্ম করতেন।

জুলফিকারের কিশোরগ্যাং পরিচালনা করার জন্য হারুন, শামছুদ্দিন বেপারী, কৃষ্ণ চন্দ্র দাস এবং সুরুজ মিয়া সার্বিক সহযোগিতা করতেন। জুলফিকার মূলত ‘ডায়মন্ড’ এবং ‘দে ধাক্কা’ গ্রুপের কিশোর গ্যাংদের দেশি-বিদেশি পিস্তল ও বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র সরবরাহ করতেন। তারা আধিপত্য বিস্তারের জন্য কিশোর গ্যাংকে অস্ত্র সরবরাহ করে তাদের দিয়ে দলবদ্ধভাবে মোটরসাইকেলের মহড়া দিয়ে এলাকায় ভীতিকর পরিবেশের সৃষ্টি করতেন।

র‌্যাব জানিয়েছে, রাজধানীর মোহাম্মদপুরজুড়ে তাদের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা ‘ডায়মন্ড’ এবং ‘দে ধাক্কা’ দুটি কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতায় প্রতিনিয়ত তারা নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে বিরোধী অন্য গ্যাংসগুলোর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তেন। খুবই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের নির্দেশে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশীয় বিভিন্ন ধারাল অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করা হতো। এসব ঘটনায় তারা হরহামেশাই যে কাউকে গুলিবিদ্ধ, কুপিয়ে জখম, ছিনতাই ও ডাকাতির মতো ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটাতেও দ্বিধাবোধ করত না তারা।

এ ছাড়া মোহাম্মদপুর তিন রাস্তার মোড়, চাঁদ উদ্যান, লাউতলা, নবীনগর হাউজিং, বসিলা চল্লিশ ফিট, কাঁটাসুর, তুরাগ হাউজিং, আক্কাস নগর, ঢাকা উদ্যান নদীর পাড়, চন্দ্রিমা হাউজিং, নবীনগর হাউজিং, বসিলা হাক্কার পাড় ইত্যাদি এলাকাজুড়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারাল দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের মহড়া দিত। কিশোরদের দিয়ে এলাকার মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণ করা হতো। এ ছাড়া তারা পথচারীদের মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে টাকা আদায় করত।