বেতন বৃদ্ধির দাবিতে শ্রমিকদের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ

Looks like you've blocked notifications!
ভালুকার জামিরদিয়া এলাকার রিদিশা স্পিনিং এন্ড ডায়িং কারখানার শ্রমিকরা শনিবার প্রায় চার ঘণ্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। ছবি : এনটিভি

ময়মনসিংহের ভালুকায় সরকার নির্ধারিত বেতনসহ বিভিন্ন দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেছে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার জামিরদিয়া এলাকায় অবস্থিত রিদিশা স্পিনিং এন্ড ডায়িং কারখানার শ্রমিকরা প্রায় চার ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় মহাসড়কের দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ শিল্প ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

শ্রমিক, শিল্প ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার অবস্থিত জামিরদিয়া এলাকায় অবস্থিত রিদিশা স্পিনিং এন্ড ডায়িং কারখানাটিতে দুই শিফটে এক হাজার ৬০০ নারী-পুরুষ শ্রমিক কাজ করেন। তবে সরকার নির্ধারিত বেতন কোন শ্রমিককেই দেওয়া হচ্ছে না। এ বিষয়ে তারা কয়েক দফায় কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করে আসছেন। কিন্তু তাদের দাবির বিষয়টি আমলে না নেওয়ায় বেশ কয়েকদিন ধরে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। শনিবার সকালে এরই দাবিতে শ্রমিকরা কারখানার ভেতর বিক্ষোভ করেন। পরে তারা মূল ফটকের বাইরে চলে আসেন এবং এক পর্যায়ে বাঁশের বেড়া দিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন।

শ্রমিকরা জানান, রিদিশা কারখানার স্পিনিং এন্ড ডায়িং সেকশনে এক হাজার ৬০০ শ্রমিক কর্মরত। কারখানা কর্তৃপক্ষ শুধু সরকার নির্ধারিত বেতন দিতেই গরিমশি করছেন না, বরং সব সময়ই বৈষম্যমূলকভাবে একেক জনকে একেক ধরনের বেতন দিয়ে আসছেন। তাছাড়া তাদের দুই বছরের ছুটির টাকাও বকেয়া রয়েছে।  এমনকি অসুস্থতাজনিত কারণে বা বিভিন্ন সমস্যার কারণেও ছুটি দেওয়া হয় না। এসব বিষয়ে বার বার দাবি করা সত্ত্বেও কারখানা কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় তারা মহাসড়কে নামেন এবং প্রায় চার ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন। এসময় শ্রমিকরা অভিযোগ করে বলেন, মহাসড়কে অবস্থানের সময় অতর্কিতভাবে পুলিশের ধাওয়া ও কারখানার ভাড়াটিয়া লাঠিয়াল বাহিনীর লাঠিপেটানোর কারণে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে মিলগেটে এসে অবস্থান করেন। অবরোধের কারণে মহাসড়কের দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে মহাসড়কে চলাচলরত দূরপাল্লার বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হন।

কারখানার অ্যাডমিন ম্যানেজার মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, তাদের টেক্সটাইল মিলে দুই শিফটে মোট শ্রমিক সংখ্যা এক হাজার ৬০০। সরকার নির্ধারিত বেতনের বিষয়টি গার্মেন্ট শ্রমিকদের জন্য গেজেট প্রকাশ হয়েছে। টেক্সটাইল বা স্পিনিং মিলের বিষয়ে এখনও গেজেট প্রকাশ হয়নি। প্রকাশ হলেই তারা তা বাস্তবায়ন করবেন।  

শিল্প পুলিশ-৫ ময়মনসিংহ জোনের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মহাসড়ক অবরোধের ঘটনাটি স্বীকার করে বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। তারা সরকারের বেতন কাঠামো অনুযায়ী বেতন বৃদ্ধি করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। সরকারের ঘোষণার পরও বেতন বৃদ্ধি না করা না হলে পরবর্তীতে তারা প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেবেন।