শিশু বক্তা রফিকুলকে আটকের গুজবে পুলিশ তদন্তকেন্দ্র ভাঙচুর, আটক ৫

Looks like you've blocked notifications!
মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী। ছবি : এনটিভি

আলোচিত ও শিশু বক্তা খ্যাত মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে আটকের গুজবকে কেন্দ্র করে পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে ভাঙচুর চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। গতকাল সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টার দিকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে। 

এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ অন্তত ২৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। মুহুর্মুহু ফাঁকা গুলিতে আশপাশের সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে এ ঘটনায় পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে বাদাঘাট এলাকা থেকে জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে। অন্যদিকে ঘটনার পর থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে আয়োজক কমিটির অনেকেই রয়েছেন আত্মগোপনে। 

জানা যায়, তাহিরপুর ‍উপজেলার বাদাঘাট বাজারে হিলফুল ফুজুল পরিষদের ব্যানারে দুই দিনব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের আয়োজন করা হয়। গতকাল সোমবার রাতে আলোচিত শিশু বক্তা খ্যাত মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে মাহফিলস্থলে নিয়ে আসার চেষ্টা করেন আয়োজকরা। কিন্তু তাতে প্রশাসনের অনুমতি মেলেনি। যদিও রাত ১২টার দিকে মাওলানা মাদানি মাহফিলস্থলের বাইরে বাদাঘাটে বাজারে অবস্থান করছিলেন। পরে এ নিয়ে আয়োজকদের সঙ্গে প্রশাসনের অনেক দেন-দরবার চলে। শেষ পর্যন্ত বিষয়টিতে সমাধান না আসায় আয়োজক কমিটি তাদের মাহফিল এদিনের মতো সমাপ্ত ঘোষণা করে।

এদিকে মাহফিল সমাপ্ত ঘোষণা করলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে আগত লোকজন। পরে তারা নানা স্লোগান দিয়ে বাজারের বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ জনতার একটি অংশ বাদাঘাট পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে গিয়ে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে এবং ভাঙচুর চালায়। ভাঙচুরকারীরা তদন্তকেন্দ্রের বাঁশের বেড়া ও সাইনবোর্ড উপড়ে ফেলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ এ সময় ২৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। 

আয়োজক কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে মাহফিলস্থলে না আনতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের নিষেধ করা হয়। আমরাও প্রশাসনের কথা মেনে তাঁকে মাহফিলস্থলে নিয়ে যাইনি এবং মাহফিল সমাপ্ত ঘোষণা করি। পরে বিক্ষুব্ধ জনতার একটি অংশ স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে ভাঙচুর চালায়। 

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন জানান, মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী এখানে আসবেন আমাদের জানা ছিল না। রাত ১০টায় হঠাৎ করে শুনি তিনি আসবেন। পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনা হোক। তবে কোনো নিরীহ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ জানান, রফিকুল ইসলাম মাদানীকে অনুমতি ছাড়া বক্তব্য দিতে দেওয়া যাবে না বলে জানায় পুলিশ। পরে গুজব রটানো হয়, রফিকুল ইসলামকে ফাঁড়িতে আটকে রাখা হয়েছে। একপর্যায়ে কিছু মানুষ ফাঁড়ির সামনে এসে ইটপাটকেল ছুড়ে এবং ফাঁড়ির সীমানার বাঁশের বেড়া ভারঙচুর করে। পরে পুলিশ দুই রাউন্ড টিয়ারগ্যাস ও ২৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।