মহাদেও নদীর বালুমহালে ইজারায় উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ

Looks like you've blocked notifications!
নেত্রকোনার সীমান্ত উপজেলা কলমাকান্দার মহাদেও নদী। ছবি : এনটিভি

নেত্রকোনার কলমাকান্দায় মহাদেও নদীর বালুমহালের ইজারা সংক্রান্ত কার্যক্রমের ওপর এক মাসের স্থগিতাদেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ২০২২ সালে জনস্বার্থে একটি মামলা করে।

সীমান্ত উপজেলা কলমাকান্দার রংছাতি ইউনিয়নের সন্যাসীপাড়া গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত মহাদেও নদীতে বিদ্যমান ওমরগাঁও, হাসনায়াগাঁও ও বিশাউতি নামক বালুমহালের ইজারা সংক্রান্ত কার্যক্রমের উপর এই স্থগিতাদেশ দেন উচ্চ আদালত। একইসাথে আদালত আগামী এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) কর্তৃক হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ সম্পন্ন করে জেলা প্রশাসককে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশনা দেন।

আজ রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহ সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ২০২২ সালে  জনস্বার্থে  বেলার করা মামলায়  এ নির্দেশ দেন।

এ মামলার বিবাদী পক্ষ হলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কমিশানার এবং নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও কলমাকান্দার নির্বাহী কর্মকর্তা।

বেলার পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং তাঁকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট এস. হাসানুল বান্না।

এ তথ্য নিশ্চিত করে অ্যাডভোকেট এস. হাসানুল বান্না জানান, বেলা নেত্রকোনার কলমাকান্দার রংছাতি ইউনিয়নের সন্যাসীপাড়া গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত মহাদেও নদীতে বিদ্যমান ওমরাগাঁও, হাসনায়াগাঁও ও বিশাউতি নামক বালুমহালের ইজারা সংক্রান্ত সব কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে হাইকোর্ট বিভাগে ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল জনস্বার্থে মামলা করে। মামলার প্রাথমিক শুনানি শেষে ওই বছরের ১৩ জুন মহামান্য আদালত মহাদেও নদী, নদী সংলগ্ন ফসলি জমি, স্থানীয় বাজার, বসতবাড়ি, বাগান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও বৃক্ষাদি রক্ষার ব্যর্থতা সংবিধান ও দেশে প্রচলিত আইনের লঙ্ঘন বিধায় তা কেন আইনবহির্ভূত, আইনি কর্তৃত্ববিহীন ও জনস্বার্থবিরোধী ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে বিবাদীদের বিরুদ্ধে রুল জারি করেন।

একইসঙ্গে বালু উত্তোলনের ফলে মহাদেও নদী, নদীর প্রতিবেশগত ব্যবস্থা ও সংশ্লিষ্ট গ্রামবাসীর সম্পদের যে ক্ষতি হয়ে ছে তা নিরুপণ ও ইজারা গ্রহীতাসহ দোষী ব্যক্তির কাছ থেকে আদায়ের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না এবং কেন মহাদেও নদীকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা এবং এর যথাযথ ব্যবস্থাপনার নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চেয়েছেন আদালত। সেইসঙ্গে আদালত জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও নেত্রকোনার সহকারী পরিচালককে মহাদেও নদীর অবস্থা সংবলিত প্রতিবেদন প্রস্তুত এবং তা ৯০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ বলেন, ‘আদেশের কপি হাতে পাইনি। পেলে হাইকোর্ট যে নির্দেশনা দেবেন সে মোতাবেক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।